Sunday, September 17, 2017

জেনে নিন কোডেক্স জিগাস বা 'শয়তানের বাইবেল' সম্পর্কে

কোডেক্স জিগাস (লাতিন ভাষায়: Codex Gigas; বাংলা ভাষায়: বিশাল আকার বই) বিশ্বের বৃহত্তম বিদ্যমান মধ্যযুগীয় পাণ্ডুলিপি[১]। ধারনা করা হয়ে থেকে যে, ১৩শ শতাব্দীর প্রথম তৃতীয় অংশে বোহেমিয়ার (বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্র) বেনেডিক্ট পোডলাজাইসের আশ্রমে এটি তৈরি করা হয়েছিল। এটি ভালগেইট বাইবেলের পাশাপাশি অনেক ঐতিহাসিক নথি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা সমস্ত লাতিন ভাষা লেখা হয়েছে। ১৬৪৮ সালে, ত্রিশ বছরের যুদ্ধের সময় সুইডিশ সৈন্যবাহিনীরা একে যুদ্ধের লুণ্ঠিত দ্রব্য হিসেবে নিয়ে যায়। বর্তমানে এটি সুইডেনের জাতীয় গ্রন্থাগার স্টকহোমে সংরক্ষিত রয়েছে, যদিও এটি সাধারনত প্রদর্শন কারা হয় না।[১] এটি শয়তানের বাইবেল হিসেবেও পরিচিত, কারণ এর ভিতর অশুভ বড় চিত্রণ রয়েছে এবং এর পৌরাণিক কাহিনীতে বর্ণিত রয়েছে যে, লেখক এটি লিখার জন্য শয়তানের সাহায্য চেয়েছিল। আসলে লেখক ছিলেন একজন মোনাকো, সে তার ঘড়ে বসে মনোযোগ দেয় এক রাত্রিতে একটি কাজ করার জন্য যাতে তার আশ্রমের নাম সুখ্যাতি হয়।

বর্ণনা

কোডেক্স সম্পূর্ণরূপে উদ্দীপ্ত।
কোডেক্স জিগাস একটি কাঠের তৈরি কভার দিয়ে ঢাকা, যা চামড়া এবং কিছু অলঙ্কৃত ধাতু দিয়ে আবৃত। এটি ৯২ সেন্টিমিটার (৩৬.২ ইঞ্চি) লম্বা, ৫০ সেন্টিমিটার (১৯.৭ ইঞ্চি) চওড়া এবং ২২ সেন্টিমিটার (৮.৬ ইঞ্চি) পুরু, যা একে মধ্যযুগীয় বৃহত্তম পাণ্ডুলিপি হিসেবে পরিচিত করে।[২] এটি ৭৫ কেজি (১৬৫ পাউন্ড) ওজন বিশিষ্ট পাণ্ডুলিপি, যাতে রয়েছে ৩১০টি চামড়ার কাগজ যা তৈরি করতে ১৬০টি গাধা অথবা সম্ভবত বাছুরের চামড়া প্রয়োজন হয়েছে।[৩] কোডেক্স জিগাস বিশ্বের বৃহত্তম মধ্যযুগীয় পাণ্ডুলিপি।[৪] প্রাথমিকদিকে এতে ৩২০টি পাতা ছিল, কিন্তু পরবর্তীকালে এর থেকে ৮টি পাতা অপসারিত করা হয়েছে।[৫] কিসের উদ্দেশ্যে বা কারা এই পাতাগুলো অপসারিত করেছে তা অজানা। সম্ভবত, সে পাতাগুলোতে বেনেডিক্ট সন্ন্যাসীদের নিয়ম ছিল।

পৌরাণিক কাহিনী

২৯০ পৃষ্ঠার শয়তানের চিত্র।
একটি পৌরাণিক কাহিনীর অনুযায়ী যা মধ্যযুগে নথিভুক্ত করা হয়েছিল : এই পাণ্ডুলিপির লেখক ছিলেন একজন মোনাকো, যে তার মোনাকোর প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে যার ফলে তাকে শাস্তি হিসেবে তাকে জীবিত দেওয়াল গেঁথে বুজিয়ে দেওয়া হয়। এই কঠোর শাস্তি থেকে নিবৃত্তি পাওয়ার জন্য তিনি প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেন যে তিনি এক রাতের মাঝে একটি বই তৈরি করবেন যা তার আশ্রমের নাম চিরকালের জন্য সুখ্যাতি করবে, যেখানে মানুষের সমস্ত জ্ঞান থাকবে। তিনি মধ্যরাত্রি কাছাকাছি নিশ্চিত হন, যে তিনি একা এই কাজের সম্পূর্ণ করতে পারবেন না, তাই তিনি একটি বিশেষ প্রার্থনা করেন, ঈশ্বরের কাছে না নিপতিত দেবদূত শয়তানের কাছে। তার আত্মার বিনিময়ে বইটি সম্পূর্ণ করার সাহায্য প্রার্থনা করেন। শয়তান পাণ্ডুলিপিটি সম্পূর্ণ করে এবং মোনাকো শয়তানের সাহায্যের কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য প্রতীক হিসেবে সে একটি চিত্র সংযোগ করেন।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সংগ্রাহক: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল
(ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

Saturday, September 16, 2017

জেনে নিন মুসলিম সিংহপুরুষ ওমর মুখতার সম্পর্কে

ওমর মুখতার (আরবি: عمر المختار‎) (১৮৬২-১৬ সেপ্টেম্বর,১৯৩১) লিবিয়ার সিরেনিকায় জানযুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[১] ১৯১২ সাল থেকে শুরু করে প্রায় বিশ বছর তিনি লিবিয়ায় ইতালীয় ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ১৯৩১ সালে তিনি ইতালীয়দের হাতে গ্রেপ্তার হন এবং তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।

জন্ম ২০ অগাস্ট ১৮৬১
জানযুর, সিরেনিকা
মৃত্যু ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩১ (৭০ বছর)
সুলুক, ইতালি অধীকৃত লিবিয়া
পেশা কুরআন শিক্ষক
যে জন্য পরিচিত ইতালীয়দের বিরুদ্ধে লিবিয়ার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী
ধর্ম ইসলাম
জীবন সম্পাদনা

ওমর মুখতার পূর্ব সিরনিকার আল-বুতনান জেলায় জানযুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি পিতৃমাতৃহীন হন। স্থানীয় মসজিদে তিনি প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ করেন। সেনুসি আন্দোলনের মূলকেন্দ্র জাগবুবের সেনুসি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ৮ বছর শিক্ষালাভ করেন। ১৮৯৯ সালে চাদে ফরাসীদের প্রতিহত করার জন্য রাবিহ আযযুবায়েরের সাহায্যার্থে অন্য সেনুসিদের সাথে তাকে চাদে পাঠানো হয়।

ইতালীয় আক্রমণ সম্পাদনা

১৯১১ সালে ইতালী-তুর্কী যুদ্ধের সময় অ্যাডমিরাল লুইগি ফারাভেলির নেতৃত্বে ইতালীয় নৌবাহিনীর একটি দল লিবিয়ার উপকূলে পৌছায় যা তৎকালে উসমানীয় তুর্কীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তুর্কী প্রশাসন ও সেনাদেরকে তাদের অধীনস্থ অঞ্চল ইতালীয়দের কাছে ছেড়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু তুর্কী ও তাদের লিবিয় মিত্ররা আত্মসমর্পণের পরিবর্তে লিবিয়ার অভ্যন্তরে চলে যায়। ইতালীয়রা তিন দিন পর্যন্ত শহরে গোলাবর্ষণ করে। এরপর অধিকৃত অঞ্চলকে ইতালীর অধীনস্থ বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনা ইতালীয় ঔপনিবেশিক সেনাবাহিনী এবং ওমর মুখতারের বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা করে।[২]

গেরিলা যুদ্ধ সম্পাদনা

পেশাগত দিক থেকে কুরআন শিক্ষক হলেও মুখতার মরুভূমিতে যুদ্ধকৌশল বিষয়ে দক্ষ ছিলেন। স্থানীয় ভূপ্রকৃতি সম্পর্কে তার সম্যক ধারণা ছিল। তার এই জ্ঞানকে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে ইতালীয়দের বিরুদ্ধে কাজে লাগান। এই ইতালীয়রা মরু অঞ্চলে যুদ্ধের সাথে পরিচিত ছিল না। মুখতার তার ছোট সৈন্যদল নিয়ে সফল গেরিলা আক্রমণে সক্ষম হন। আক্রমণের পর তার বাহিনী মরুভূমিতে আত্মগোপন করত। তার বাহিনী দক্ষতার সাথে বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, সৈন্যবহরের উপর আক্রমণ চালায় এবং যোগাযোগ ও সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তার গেরিলা পদ্ধতির লড়াইয়ে ইতালীয় সৈনিকরা পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে।[৩]

ইতালীয় গভর্নর আর্নেস্ট বমবেলি ১৯২৪ সালে জেবেল আখদারের পার্বত্য অঞ্চলে পাল্টা গেরিলা বাহিনী গঠন করেন যা বিদ্রোহীদের উপর বেশ কয়েকটি আক্রমণ পরিচালনা করে। মুখতার দ্রুত তার কৌশল পাল্টান এবং মিশর থেকে সাহায্য লাভে সমর্থ হন। ১৯২৭ সালের মার্চে ইতালীয়রা জাঘবুব দখল করে। ১৯২৭ থেকে ১৯২৮ পর্যন্ত মুখতার সানুসি বাহিনীকে পুনর্গঠিত করেন। তার দক্ষতার কারণে ইতালীয় গভর্নর জেনারেল আটিলিয়ো তেরুজ্জি ওমরকে “ব্যতিক্রমী স্থীরচিত্ত ও অটল ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন” বলে উল্লেখ করেন।

১৯২৯ সালে পিয়েত্রো বাদোগলি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান। ওমর মুখতারের সাথে আলোচনায় তাকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। সেই বছরের অক্টোবরে মুখতার এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন এবং ইতালীয় সেনানায়ক রডোলফো গ্রাজিয়ানির সাথে ব্যাপক যুদ্ধের জন্য লিবিয় যোদ্ধাদের পুনরায় সংগঠিত করেন।

জুনে পরিচালিত সেনা অভিযানে গ্রাজিয়ানির বাহিনী মুখতারের কাছে পরাজিত হয়। পিয়েত্রো বাদোগলি, এমিলো দা বোনো ও বেনিতো মুসোলিনির সাথে গ্রাজিয়ানি মুখতারের প্রতিরোধ ভেঙে দিতে পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সহস্রাধিক মানুষকে উপকূলবর্তী কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়, গিয়ারাবুবে উপকূল থেকে লিবিয়া ও মিশরের সীমানা বন্ধ করে দেয়া হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল যাতে যোদ্ধারা কোনো বিদেশী সাহায্য না পায় এবং স্থানীয় জনতার সমর্থন থেকে বঞ্চিত হয়। সানুসিদের প্রতিরোধে গ্রাজিয়ানির এই পরিকল্পনা সফল হয়। বিদ্রোহীরা সাহায্যবঞ্চিত হয় এবং ইতালীয় বিমান দ্বারা আক্রান্ত হয়। স্থানীয় চর ও সহায়তাকারীদের সাহায্যে ইতালীয় বাহিনী স্থলযুদ্ধেও বিদ্রোহীদের উপর আধিপত্য স্থাপন করে। ঝুকি সত্ত্বেও মুখতার লড়াই চালিয়ে যান। ১৯৩১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তাকে অতর্কিত আক্রমণ করে প্রেপ্তার করা হয়।


গ্রেপ্তারের পর ওমর মুখতার
মুখতারের চূড়ান্ত প্রতিপক্ষ, জেনারেল রডোলফো গ্রাজিয়ানির বর্ণনামতে : “মাঝারি উচ্চতা, সুঠাম, সাদা দাড়ি গোফ বিশিষ্ট ব্যক্তি। ওমর মুখতার ছিলেন প্রত্যুৎপন্নমতি সম্পন্ন, ধর্মীয় বিষয়ে জ্ঞানী, শক্তিসম্পন্ন ও ক্ষীপ্র ব্যক্তি, স্বার্থ ও আপোষহীন। তিনি খুব ধার্মিক ও দরিদ্র ছিলেন যদিও তিনি ছিলেন সেনুসিদের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে।”

মৃত্যুদন্ড সম্পাদনা
ইতালীয় ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে মুখতারের প্রায় ২০ বছরব্যাপী লড়াই ১৯৩১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তার প্রেপ্তারের মাধ্যমে সমাপ্তি লাভ করে। স্লোনটার নিকটে যুদ্ধে তিনি আহত অবস্থায় প্রেপ্তার হন। তাকে প্রেপ্তারে সাহায্য করায় স্থানীয় নেতাদেরকে পুরষ্কৃত করা হয়। তার দৃঢ়তা জেলারের উপর প্রভাব ফেলে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]মুখতারের জিজ্ঞাসাবাদকারীদের মতে তিনি কুরআনের শান্তিসূচক আয়াত তেলাওয়াত করতেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]


ওমর মুখতারের ফাঁসি
মাত্র তিন দিনের মধ্যেই মুখতারের বিচার সম্পন্ন হয়। বিচারে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং ১৪ সেপ্টেম্বর রায়ে তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়া হয়। তবে ঐতিহাসিকদের মতে এই বিচার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ছিল না। শেষ কথা জানতে চাওয়া হলে মুখতার কুরআনের আয়াত “ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন” (আমরা আল্লাহর জন্য এবং তার কাছেই ফিরে যাব) পাঠ করেন। ১৯৩১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সুলুকের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে তার অনুসারীদের সামনে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল সত্তর বছর।

চলচ্চিত্র সম্পাদনা

ওমর মুখতারের জীবনের শেষ দিনগুলো "লায়ন অব দ্য ডেজার্ট"(১৯৮১) চলচ্চিত্রে তুলে ধরা হয়েছে। ওমর মুখতার ও রডোলফো গ্রাজিয়ানির মধ্যকার লড়াইকে ভিত্তি করে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়। এতে অ্যান্থনি কুইন, অলিভার রিড ও আইরিন পাপাস অভিনয় করেন।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সংগ্রাহক: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল
(ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

নোবেল পুরষ্কারের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

আলফ্রেড নোবেল ( শুনুন ), ২১ অক্টোবর ১৮৩৩ সালে সুইডেনের স্টকহোমে একটি প্রকৌশল পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি একাধারে রসায়নবিদ, প্রকৌশলী ও একজন উদ্ভাবক ছিলেন। ১৮৯৪ সালে তিনি একটি বফর লোহা ও ইস্পাত কারখানা ক্রয় করেন, যা পরবর্তীতে একটি অন্যতম অস্ত্র তৈরির কারখানায় পরিনত করেন। তিনি ব্যালিস্টিক উদ্ভাবন করেন, যা সারা বিশ্বব্যাপী ধোঁয়াবিহীন সামরিক বিস্ফোরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাঁর ৩৫৫ টি উদ্ভাবনের মাধ্যমে তিনি জীবদ্দশায় প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক হন যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য ছিল ডিনামাইট[৪]।

১৮৮৮ সালে তিনি মৃতদের তালিকা দেখে বিস্মত হন, যা একটি ফরাসি পত্রিকায় এ মার্চেন্ট অব ডেথ হু ডেড প্রকাশিত হয়। যেহেতু নোবেলের ভাই লুডভিগ মারা যায়, এই নিবন্ধটি তাকে ভাবিয়ে তোলে এবং খুব সহজেই বুঝতে পারেন যে ইতিহাসে তিনি কিভাবে স্মরণীয় হতে চান। যা তাকে তার উইলটি পরিবর্তন করতে অনুপ্রাণিত করে।[৫] ১০ ডিসেম্বর ১৮৯৬ সালে আলফ্রেদ নোবেল তার নিজ গ্রাম স্যান রিমো, ইতালিতে মৃত্যু বরন করেন। সেই সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর[৬]।

নোবেল তার জীবদ্দশায় অনেক গুলো উইল লিখে গিয়েছিলেন। সর্বশেষটা লেখা হয়েছিল তার মৃত্যুর মাত্র এক বছর আগে ২৭ নভেম্বর ১৮৯৫ সালে প্যারিসে অবস্থিত সুইডিশ-নরওয়ে ক্লাবে।[৭][৮] বিস্ময় ছড়িয়ে দিতে, নোবেল তার সর্বশেষ উইলে উল্লেখ করেন যে তার সকল সম্পদ পুরস্কার আকারে দেয়া হবে যারা পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্যে বৃহত্তর মানবতার স্বার্থে কাজ করবেন[৯]। নোবেল তার মোট সম্পদের (৩১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা) ৯৪ শতাংশ এই পাঁচটি পুরস্কারের জন্য উইল করেন।[১০] ২৬ এপ্রিল ১৮৯৭ এর আগ পর্যন্ত সন্দেহ প্রবনতার জন্য নরওয়ে থেকে এই উইল অনুমোদন করা হয় নি।[১১] নোবেলের উইলের সমন্বয়কারী রগনার সোলম্যান ও রুডলফ লিলজেকুইস্ট নোবেল ফাউন্ডেশন তৈরি করেন। যার কাজ তার সম্পদের রক্ষনাবেক্ষন ও নোবেল পুরস্কার অনুষ্ঠানের আয়জন করা।[১২]

১৮৯৭ সালে নোবেলের উইল অনুমোদন হবার সাথে সাথেই নোবেল পুরস্কার প্রদানের জন্য নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি নামক একটি সংস্থা তৈরি করা হয়। অতি শীঘ্রই নোবেল পুরস্কার দেবার অন্যান্য সংস্থাগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তাদের মধ্যে ৭ জুন ক্যারোলিংস্কা ইনিস্টিটিউট, ৯ জুন সুইডিশ একাডেমী এবং ১১ জুন রাজকীয় সুয়েডীয় বিজ্ঞান একাডেমি[১৩]। নোবেল ফাউন্ডেশন কিভাবে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয় তার একটি নীতিমালায় পৌছায় এবং ১৯০০ সালে নোবেল ফাউন্ডেশন নতুনভাবে একটি বিধি তৈরি করে যা রাজা অস্কার কর্তৃক জারি করা হয়। [৯] ১৯০৫ সালে সুইডেন ও নরওয়ের মধ্যে বন্ধন বিলুপ্ত হয়। তার পর থেকে নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি শুধু মাত্র শান্তিতে নোবেল পুরস্কার এবং সুইডেনের প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যান্য পুরস্কার গুলো প্রদানের দায়িত্ব পায়।[১১]

আলফ্রেড নোবেলের উইল সম্পাদনা
সুইডেনের রসায়নবিদ ও শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেলের উইল অনুসারে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। নোবেল ডিনামাইট আবিষ্কার করেছিলেন, যার মাধ্যমে তার প্রচুর আয় হয়, আর এই আয়ের অর্থ দ্বারাই তিনি পুরস্কার প্রদানের কথা বলে যান। জীবদ্দশায় নোবেল অনেকগুলো উইল লিখেছিলেন, এর মধ্যে সর্বশেষটি লিখেন তার মৃত্যুর মাত্র এক বছর আগে নভেম্বর ২৭, ১৮৯৫ তারিখে। নোবেলের উদ্ভাবনটি ছিল অনেকাংশেই একটি বিস্ফোরক যা প্রভূত ক্ষতির কারণ হতে পারত। তাই যুদ্ধক্ষেত্রে এই ডিনামাইটের ব্যবহার তাঁকে শঙ্কিত করে তোলে। নোবেল পাঁচটি ক্ষেত্রে পুরস্কার দেয়ার জন্য তার মোট সম্পত্তির শতকরা ৯৪ ভাগ দান করে যান। এর মোট পরিমাণ ৩১ মিলিয়ন এসইকে (৩.৪ মিলিয়ন ইউরো, ৪.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সংগ্রাহক: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল
(ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

সকল কাজের মূলেই যেন থাকে খোদার সন্তুষ্টি অর্জন

লেখা: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল আপনারা হয়তো মুসলিম জাহানের ৪র্থ খলিফা হযরত আলী ইবনে আবু তালিবের (রাঃ) সেই ঘটনাটি শোনেছেন। একদা যুদ্ধের ময়দান...