Showing posts with label ইসলাম. Show all posts
Showing posts with label ইসলাম. Show all posts

Friday, December 18, 2020

সকল কাজের মূলেই যেন থাকে খোদার সন্তুষ্টি অর্জন

লেখা: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল

আপনারা হয়তো মুসলিম জাহানের ৪র্থ খলিফা হযরত আলী ইবনে আবু তালিবের (রাঃ) সেই ঘটনাটি শোনেছেন।
একদা যুদ্ধের ময়দানে কাফিরদের সাথে মুসলিমদের তুমুল যুদ্ধ চলছে।

হযরত আলী (রাঃ) এক শক্তিশালী শত্রুর সাথে যুদ্ধে মত্ত রয়েছেন। দীর্ঘক্ষণ যুদ্ধ চলার পর আল্লাহর সিংহ হযরত আলী (রাঃ) তাকে কাবু করে মাটিতে ফেলে দেন এবং সেই কাফেরকে আঘাত হানার জন্য তার জুলফিকার বের করেন।
ঠিক আঘাত হানার আগেই ভূপাতিত সেই কাফের হযরত আলীর (রাঃ) চেহারা মুবারকে থুথু নিক্ষেপ করল। রাগের কারণে হযরত আলীর (রাঃ) চেহারা রক্তবর্ণ হয়ে ওঠল। মনে হলো এখনই তাঁর তরবারি সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে শত্রুকে ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলবে। কিন্তু তিনি তা করলেন না। যে তরবারি আঘাত হানার জন্য ওপরে ওঠেছিল এবং যা বিদ্যুত গতিতে শত্রুর শরীরকে ক্ষত-বিক্ষত করার কথা ছিল, তা থেমে গেল। শুধু থেমে গেল নয়, ধীরে ধীরে নীচে নেমে এল। পানি যেমন আগুনকে ঠান্ডা করে দেয় , তেমনিভাবে হযরত আলীর (রাঃ) রাগে লাল হয়ে যাওয়া পবিত্র মুখমন্ডলও শান্ত হয়ে পড়ল।

হযরত আলীর (রাঃ) এই আচরণে শত্রু অবাক হয়ে গেল। যে তরবারি এসে তার দেহকে খন্ড-বিখন্ড করে ফেলার কথা, তা আবার কোষবদ্ধ হলো কোন কারণে! বিষ্ময়ের ঘোরে শত্রুর মুখ থেকে কিছুক্ষন কথা বের হলো না। এমন ঘটনা সে দেখেনি, শোনেও নি কোন দিন। ধীরে ধীরে শত্রুটি মুখ খোলল। বলল, “আমার মতো মহাশত্রুকে তরবারির নীচে পেয়েও তরবারি কোষবদ্ধ কেন করলেন?”

হযরত আলী (রাঃ) উত্তর দিলেন, “আমরা নিজের জন্য কিংবা নিজের কোনো খেয়ালখুশি চরিতার্থের জন্য যুদ্ধ করি না। আমরা আল্লাহর পথে আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য যুদ্ধ করি। কিন্তু আপনি যখন আমার মুখে থুথু নিক্ষেপ করলেন তখন প্রতিশোধ গ্রহণের ক্রোধ আমার কাছে বড় হয়ে ওঠল। এই অবস্থায় আপনাকে হত্যা করলে সেটা আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য হতো না, বরং তা আমার প্রতিশোধ গ্রহণ হতো। আমি আমার জন্য হত্যা করতে চাইনি বলেই তরবারি ফিরিয়ে নিয়েছি। ব্যক্তিস্বার্থ এসে আমাকে জিহাদের পুণ্য থেকে বঞ্চিত করুক, তা আমি চাইনি।”

শত্রুটি মাটি থেকে ওঠে দাঁড়িয়ে সাথে সাথে তাওবাহ করে ইসলাম কবুল করলেন। আল্লাহু আকবার! এমন শ্রেষ্ঠ, মহান বীরের হৃদয়েও এই পরিমাণ ক্ষমা এবং স্বস্তিগুণ বিদ্যমান থাকে, এত বড় যোদ্ধা এরকম জিহাদের ময়দানেও এমন শক্তিশালী, বলবান শত্রুকে এতটুকু কর্তব্যজ্ঞানে ছেড়ে দিতে পারেন, তা শত্রুকে বিমোহিত করল। 

শের-ই-খোদা হযরত আলী ইবনে আবু তালিবের (রাঃ) এই ঘটনা থেকে আমরা কী শিক্ষা পাই? আমরা শিক্ষা পাই মুমিনের সকল কাজই আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য করতে হবে। আল্লাহর একজন প্রকৃত বান্দা কখনোই নিজের স্বার্থের জন্য, নিজের ফায়দা হাসিলের জন্য কোনো কাজ করে না, বরং করে একমাত্র মহান রবের সন্তুষ্টি লাভের আশায়। আমরাও যদি প্রকৃত মুসলমান হতে চাই তবে নিজের স্বার্থকে বিসর্জন দিতে হবে, সকল কাজের উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি।

Monday, October 5, 2020

ইসলামে ধর্ষণের শাস্তি কী!

লেখা: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল 

ইসলামে ধর্ষণের শাস্তি খুবই কঠোর। পুরো লেখাটা পড়লে আপনারা বিষয়টি নিশ্চিত হবেন ইনশাআল্লাহ। তবে আলোচনার শুরুতে ইসলামে ধর্ষণের শাস্তির তালিকা দেওয়া হলো-
১. প্রকাশ্যে পাথর মেরে হত্যা করা
২. ১০০ বেত্রাঘাত
৩. ব্যক্তিভেদে ওপরের ২ ধরণের শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি ‘মুহারাবা’র শাস্তি প্রয়োগ। (‘মুহরাবা’ সম্পর্কে নিচের বিস্তারিত আলোচনায় পাবেন)

ধর্ষণের ক্ষেত্রে এক পক্ষ থেকে ব্যভিচার সংঘটিত হয়। আর অন্য পক্ষ হয় মজলুম বা নির্যাতিত। তাই মজলুমের কোনো শাস্তি নেই। শুধু জালিম বা ধর্ষকের শাস্তি হবে। ধর্ষণের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় সংঘটিত হয়। এক. ব্যভিচার। দুই. বল প্রয়োগ। তিন. সম্ভ্রম লুণ্ঠন। ব্যভিচারের জন্য পবিত্র ক্বুরআনে বর্ণিত ব্যভিচারের শাস্তি পাবে। ইসলামে ব্যভিচারের শাস্তি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন।
ব্যভিচারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
আর যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে ১০০ বেত্রাঘাত করা হবে।

হানাফি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাব মতে, ধর্ষণের জন্য ব্যভিচারের শাস্তি প্রযোজ্য হবে।

তবে ইমাম মালেকের (রহঃ) মতে, ধর্ষণের অপরাধে ব্যভিচারের শাস্তির পাশাপাশি মুহারাবার শাস্তি প্রয়োগ করা হবে। ‘মুহারাবা’ হলো অস্ত্র দেখিয়ে বা অস্ত্র ছাড়াই ভীতি প্রদর্শন করে ডাকাতি করা কিংবা লুণ্ঠন করা। এককথায় ‘মুহারাবা’ হলো পৃথিবীতে অনাচার সৃষ্টি, লুণ্ঠন, নিরাপত্তা বিঘ্নিতকরণ, ত্রাসের রাজ্য কায়েম করা ইত্যাদি। পবিত্র ক্বুরআনে মহান আল্লাহ ‘মুহারাবা’র শাস্তি এভাবে নির্ধারণ করেছেন, “যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি হচ্ছে তাদের হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে বা তাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কেটে দেওয়া হবে কিংবা দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। এটি তাদের পার্থিব লাঞ্ছনা, আর পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।” (সুরা: মায়িদা, আয়াত: ৩৩)

এই আয়াতের আলোকে মালেকি মাজহাবে ধর্ষণের শাস্তিতে ‘মুহারাবা’র শাস্তি যুক্ত করার মত দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, সমাজে ধর্ষণ মহামারির আকার ধারণ করলে, সমাজ থেকে ধর্ষণ সমূলে নির্মূল করার লক্ষ্যে এ শাস্তি প্রয়োগ করা জরুরি। (আল মুগনি: ৮/৯৮)

সবশেষে বলতে চাই, ধর্ষণের ক্ষেত্রে ইসলামি আইন মতে শাস্তি দেওয়া হলে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে ধর্ষণ দূর হবে ইনশাআল্লাহ।


Friday, March 6, 2020

চলুন বেশি বেশি তাওবাহ করি

#প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা,
চলুন করোনা ভাইরাসসহ সকল প্রকার বালা মুসিবত থেকে রক্ষা পেতে যথাযথ সচেতনতার পাশাপাশি আমরা বেশি বেশি তাওবাহ করি। আল্লাহ তা'আলা বলেন, "তোমাদেরকে যেসব বিপদাপদ স্পর্শ করে, সেগুলো তোমাদেরই কৃতকর্মের কারণে। আর অনেক গুনাহ তিনি (আল্লাহ) ক্ষমা করে দেন।" (সুরা শুরা : ৩০)

অতএব, মানুষ বিপদের সম্মুখীন হয় গুনাহর কারণে। তাই আল্লাহ তা'আলার কাছে আমাদের বেশি করে ক্ষমা চাইতে হবে, তাওবাহ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
"তোমরা প্রত্যেকেই আন্তরিকতার সঙ্গে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করো।" (সুরা আত-তাহরিম : আয়াত ৮)

হাদীসে বর্ণিত আছে,

"أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
(অর্থ : "আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর। এবং আমি তাঁর কাছে তওবা করছি।")

এই দোয়া পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র হতে পলায়নকারী হয়।" (আবু দাউদ-১৫১৭, তিরমিযী-৩৫৭৭, মিশকাত-২৩৫৩)

এছাড়া করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য রোগ থেকে রক্ষা পেতে নিম্নের দু'আটিও গুরুত্বপূর্ণ -

اللَّهمَّ إِنِّي أَعُوُذُ بِكَ مِنَ الْبرَصِ، وَالجُنُونِ، والجُذَامِ، ومن سّيءِ الأَسْقامِ.

অর্থ : "হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট ধবল, কুষ্ঠ এবং উন্মাদনাসহ সব ধরনের কঠিন দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে পানাহ চাই।" (সুনান আবু দাউদ)

------- Ainan Yasrobi

Wednesday, January 22, 2020

ধর্ষণ বন্ধ হচ্ছে না কেন!

যে যতই থিওরি দিয়ে ধর্ষণ বন্ধ করার চেষ্টা করুক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত কুরআনের নির্দেশনা না মানা হবে ততক্ষন পর্যন্ত কোনোভাবেই ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব নয়। চলুন দেখি, ধর্ষণসহ সকল প্রকার জিনা বন্ধে কুরআনের সাধারণ কি নির্দেশনা রয়েছে।

আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআন মাজীদে সূরা নূরের ৩০ নং আয়াতে বলছেন, 'হে নবী! মুমিনদের (পুরুষ) বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এতেই তাদের জন্য পবিত্রতা রয়েছে। নিশ্চয়ই তারা যা করে, আল্লাহ তা সম্পর্কে অবহিত আছেন।' 
(সূরা নূর, ৩০)

এখানে পুরুষদেরকে আল্লাহ তা'আলা দৃষ্টি নত রাখতে বলেছেন। অর্থ্যাৎ যেসব নারীদের দিকে পুরুষদের দৃষ্টি দেয়া জায়েজ নেই, তাদের দিকে না তাকাতে বলেছেন এবং পাশাপাশি লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে বলেছেন। এখন পুরুষরা যদি কুরআনের এই নির্দেশনা পালন না করে, তাহলে ধর্ষণ বন্ধ হবেনা।

আর ধর্ষণসহ সকল প্রকার জিনা বন্ধে কুরআনে নারীদের প্রতিও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আল্লাহ তা'আলা বলেন, 'হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।'
(সূরা আহযাব, ৫৯)

আরও বলা হয়েছে, 'হে নবী! মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তারা যেন সাধারণত যা প্রকাশ থাকে তা ছাড়া নিজেদের আভরণ প্রদর্শন না করে।'
(সূরা নূর, ৩১)

এখানে নারীদের দৃষ্টিও সংযত রাখার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি হিজাব পালনের কথা বলা হয়েছে।

উপরে উল্লিখিত আয়াত ছাড়া জিনা বন্ধ করতে কুরআন ও হাদীসে আরও অনেক আলোচনা রয়েছে। তবে আমি মনে করি, ধর্ষণসহ সকল প্রকার জিনা বন্ধের মূল নির্দেশনা এই আয়াতগুলোর ভেতরেই রয়েছে। এখন আপনারা বলুন, বাংলাদেশের নারী বা পুরুষের মধ্যে কয়জন এই আয়াতগুলোর নির্দেশনা মেনে চলে! আর যতদিন সমাজে কুরআনের আয়াতের নির্দেশনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন না হবে ততদিন ধর্ষণও বন্ধ হবে না। চলুন আজ থেকে আমরা নিজেরা পর্দা মেনে চলি এবং অপরকে উদ্বুদ্ধ করি। 

এখন একদল লোক বলবে, 'ভাই, এই আয়াতগুলোর নির্দেশনার বাস্তবায়নই যদি সমাধান হয় তাহলে শিশুরা এবং বৃদ্ধারা কেন ধর্ষণের শিকার হয়? পর্দা করা নারী কেন ধর্ষণের শিকার হয়?'
এসব প্রশ্নের উত্তর একদম সোজা। ধরুন, আপনি এক কাপ চা বানাতে দুধ, চিনি দিলেন। কিন্তু চা পাতা দিলেন না। তাহলে কি চা হবে! হবে না। অতএব, সমাজের কিছুসংখ্যক নারী-পুরুষ কুরআন মেনে চললো, আর বিরাটসংখ্যক নারী-পুরুষ কুরআন ধরলোই না, এভাবে ধর্ষণ বন্ধ হবে না। বরং সমাজের প্রত্যেক নারী-পুরুষকে পর্দা মেনে চলতে হবে। নয়তো শিশু,বৃদ্ধা কিংবা পর্দা করা নারী কেউই ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাবেনা।

- Ainan

Saturday, January 18, 2020

মানুষকে ভালোবাসুন, আল্লাহ তা'আলা আপনাকে ভালোবাসবেন

যখন আপনার রক্ত লাগে তখন কি আপনি দেখেন, যে ব্লাড ডোনার আপনাকে রক্ত দিচ্ছে সে কোন মতাদর্শের! না। দেখেন না। আর রক্তদাতাও যদি আপনার মতাদর্শ বিবেচনা করতেন, তাহলে হয়তো আপনাকে আর রক্ত দেয়া হতো না তার। মতাদর্শ, ধর্ম ইত্যাদির ভিন্নতার জন্য কখনোই মানুষকে ঘৃণা করা যাবেনা। রসূলুল্লাহর(সঃ) আদর্শ ছিল মানুষকে ভালোবাসা সে যে মতাদর্শেরই হোক না কেন। 

হাদীসে এসেছে, হযরত সাহল ইবনে হুনাইফ ও হযরত কায়েস ইবনে সা'দ (রাঃ) একদিন বসা ছিলেন। তারা তখন কাদিসিয়ায় থাকেন। পাশ দিয়ে একটি লাশ নেয়া হচ্ছিল। তা দেখে তারা দুজনই দাঁড়ালেন। উপস্থিত লোকেরা তাদেরকে জানাল, 'এ এক অমুসলিমের লাশ।' তাঁরা তখন শোনালেন, রসূলুল্লাহর (সল্লল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাশ দিয়েও একবার এক লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তিনি যখন তা দেখে দাঁড়ালেন, উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম তখন বললেন, 'এ তো ইহুদির লাশ।' রসূলুল্লাহ (সল্লল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, أليست نفسا অর্থাৎ 'সে মানুষ  ছিল তো?' 
(সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৩১২)

রসূল(সঃ) কোনো মানুষকে ঘৃণা করতেননা সে যে ধর্মেরই হোকনা কেন। রসূলের(সঃ) জীবনে এরকম আরও অনেক ঘটনা আছে। যেখানে রসূলই(সঃ) মানুষকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে তার মত-পথ দেখেননি। সেখানে আমরা কিভাবে মতপার্থক্যের কারণে মানুষকে ঘৃণা করতে পারি!
  
 - Ainan

Sunday, December 1, 2019

আওলাদে রসূল (সঃ) এবং আহলে বায়াতে রসূল (সঃ) নিয়ে ভন্ডামি এবং একটি হাদীসের অপব্যাখ্যা

আমাদের প্রথমত 'আওলাদে রসূল' এবং 'আহলে বায়াতে রসূল', এই দু'টো শব্দের পার্থক্য জানতে হবে। সোজা কথায়, আওলাদে রসূল (সঃ) বলতে রসূলুল্লাহর (সঃ) বংশধরকে বোঝায়। অন্যদিকে আহলে বায়াতে রসূল (সঃ) বলতে রসূলুল্লাহর (সঃ) পরিবারবর্গকে বোঝায়। প্রিয়নবীর (সঃ) পরিবারে যাঁরা ছিলেন অর্থ্যাৎ পরিবারের সদস্যরাই কেবল হযরতের আহলে বায়াতের অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে 'আওলাদে রসূল' বলতে রসূলের (সঃ) বংশধরকে বোঝায়। অতএব, এই দু'টি শব্দই সম্পূর্ণ আলাদা। যেমন : হযরত আয়েশা (রাঃ) রসূলে করিমের (সঃ) বংশধর বা আওলাদে রসূল (সঃ) নন, কিন্তু তিনি আহলে বায়াতে রসূলের (সঃ) অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে বর্তমানে কেউ যদি সত্যিই আওলাদে রসূল (সঃ) হন, তবে তিনি আহলে বায়াতে রসূলের (সঃ) অন্তর্ভুক্ত হবেন না। কেননা তিনি রসূলের বংশধর হতে পারেন, কিন্তু পরিবারের সদস্য নন। তিনি রসূলের (সঃ) যেই পরিবার ছিল, সেখানে ছিলেন না।

আওলাদে রসূল (সঃ) সম্পর্কে কোনো হাদীস নেই। কিন্তু আহলে বায়াতে রসূল (সঃ) সম্পর্কিত হাদীস রয়েছে। এমনই একটি উল্লেখযোগ্য হাদীস হলো, 
"হযরত আবু যর (রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) হতে বর্ণিত,
তিনি পবিত্র ক্বাবা ঘরের দরজা হাত
দিয়ে ধরা অবস্থায় বলেন, আমি নবীয়ে পাককে
(সল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে আমার
আহলে বায়াতের দৃষ্টান্ত হযরত নুহ্ (আলাহিস সালামের)
জাহাজের মত । যে এতে আরোহন
করেছে সে মুক্তি পেয়েছে, আর যে এটা থেকে মুখ
ফিরিয়ে নিয়েছে, সে ধ্বংস হয়েছে।"
(মুসনাদে ইমাম
আহমদ : সুত্র : মিশকাত শরীফ ৫৭০ পৃষ্ঠা) 

বর্তমানে আমাদের সমাজে বেশিরভাগ ভন্ডরাই নিজেদেরকে বা তার ভক্তরা তাকে আওলাদে রসূল (সঃ) দাবী করে এবং এই হাদীসকে উদাহরণ হিসেবে টেনে বলে যে তারা হাদীস অনুযায়ী নিজেদের মুক্তির জন্য আওলাদে রসূলকে (সঃ) অনুসরণ করছে। অথচ হাদীসে আওলাদে রসূলকে (সঃ) অনুসরণ করতে বলা হয় নি, বরং রসূলের (সঃ) আহলে বায়াতের মর্যাদার কথা বলা হয়েছে। আর আহলে বায়াত আর আওলাদে রসূলের (সঃ) মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে যা উপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান। অতএব, কেউ যদি 'আওলাদে রসূল' দাবী করে ভন্ডামি করে তবে আমরা তাকে অনুসরণ করবনা বরং আহলে বায়াতে রসূলের (সঃ) পথ অনুসরণ করব। 

পোস্টটি শেয়ার করুন এবং ভন্ড, মাজার পূজারীদের রুখে দিন। ধন্যবাদ।

- Ainan

Saturday, April 20, 2019

লাইলাতুল বারাআত প্রসঙ্গে

--- মুহাম্মাদ ইনান ইকবাল

লাইলাতুল বারাআতের পরের দিন রোজা রাখার কথা রয়েছে। এই রাতে সাধ্যমতো ইবাদত করার কথা রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট করে এই রজনীর কোনো নামাজ নেই।

এই পবিত্র রাত সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ হাদীসমূহ :-

হযরত আয়েশা (রঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে রয়েছে, "আমি এক রাতে মহানবীকে (সঃ) বিছানায় পেলাম না। তাই আমি অত্যন্ত পেরেশান হয়ে খোঁজাখুঁজি আরম্ভ করলাম। খুঁজতে খুঁজতে দেখি, তিনি জান্নাতুল বাকীর মধ্যে মহান আল্লাহর প্রার্থনায় মগ্ন। তখন তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা! আমার নিকট হযরত জিবরাইল (আঃ) উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, আজ রাত হল নিসফে শাবান অর্থাৎ, লাইলাতুল বারাআত। এ রাতে আল্লাহ তা'আলা অধিক পরিমাণে জাহান্নামবাসী লোকদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। এমনকি কালব বংশের বকরীগুলোর লোম সমপরিমাণ গুনাহগার বান্দা হলেও।" [মিশকাত শরীফ-১১৫ পৃ ]

মুয়াজ ইবনে জাবাল (রঃ) বলেন, "রসূল (সঃ) বলেছেন, শাবান মাসের মধ্য রাতে আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন, মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যক্তি ব্যতিত অন্য সকলকে তিনি ক্ষমা করেন।" [আলবানী : সহীহাহ/৩]

হযরত সাইয়্যিদুনা আলী মুরতাদ্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মহান বাণী, "যখন শাবানের ১৫তম রাতের আগমন ঘটে তখন তাতে কিয়াম (ইবাদত) করো আর দিনে রোযা রাখো । নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা‘আলা সূর্যাস্তের পর থেকে প্রথম আসমানে বিশেষ তাজাল্লী বর্ষণ করেন এবং ইরশাদ করেন, "কেউ আছ কি আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনাকারী? তাকে আমি ক্ষমা করে দিব। কেউ আছ কি জীবিকা প্রার্থনাকারী? তাকে আমি জীবিকা দান করব। কেউ কি আছ মুসিবতগ্রস্ত? তাকে আমি মুক্ত করব। কেউ এমন আছ কি? কেউ এমন আছ কি? এভাবে সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদেরকে ডাকতে থাকবেন।" [সুনানে ইবনে মাযাহ, ২য় খন্ড, পৃঃ ১৬০, হাদিস নং-১৩৮৮]

Tuesday, February 6, 2018

ইসলামের দৃষ্টিতে টেরট কার্ড পড়া কি জায়েজ?

টেরট কার্ড বলতে এমন কতগুলো প্রাচীন কার্ডকে বুঝায় যেগুলো পড়ে ভবিষ্যত জানা যায় এবং গায়েবী জানা যায় বলে একশ্রেণীর মানুষ বিশ্বাস করে।
ইসলামে টেরট কার্ড পড়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।কারণ ইসলামের অালোকে অদৃশ্য বা গায়েবী সম্পর্কে এবং ভবিষ্যতে কি হতে পারে সেই সম্পর্কে একমাত্র অাল্লাহ তা'অালা ব্যতীত কেউ জানতে পারেনা।
আল্লাহ তা'অালা বলেন :-
ﻗُﻞْ ﻟَﺎ ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﻣَﻦْ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺍﻟْﻐَﻴْﺐَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ
অর্থ : "আপনি বলুন, একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত আসমান ও জমিনের কেউ অদৃশ্যের সংবাদ জানেন না।"(সূরা নামল : ৬৫)
অন্য এক আয়াতে অাল্লাহ তা'অালা বলেন, "নিশ্চয়ই কিয়ামতের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছেই রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং জরায়ুতে কী আছে তা তিনিই জানেন। কেউ জানে না আগামীকাল সে কী উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোথায় তার মৃত্যু ঘটবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ। সব বিষয়ে অবহিত"(সূরা লোকমান : ৩৪)
অতএব,টেরট কার্ডের মাধ্যমে মানুষ ভবিষ্যত ও গায়েবী জানতে পারে,এরকম বিশ্বাস করা উপরের অায়াতসমূহের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

এজন্য অদৃশ্য ও অজানা বিষয়ের কেউ দাবি করতে পারবে না এবং যারা দাবি করে তাদের ধারে-কাছেও যাওয়া যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,"যে ব্যক্তি গণকের কাছে ভবিষ্যতের কোনো বিষয়ে জানতে চায়, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার কোনো নামাজ আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।"
অন্য এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, "যে ব্যক্তি গণকের কাছে যায় এবং তার কথা বিশ্বাস করে, সে যেন রাসুল (সা.)-এর আনীত ইসলামকে অবিশ্বাস করল।"
যে ব্যক্তি ভাগ্যগণনা করে,মানুষের ভবিষ্যত বলার দাবী করে তাকেই গণক বলে।টেরট কার্ড রিডাররাও ভাগ্য গণনা করে,মানুষের ভবিষ্যত বলে।অতএব,তারাও গণক।অতএব,তাদের কাছে গিয়ে ভবিষ্যত জানতে চাইলে চল্লিশ দিন পর্যন্ত সালাত যেমন কবুল হবে না তেমনি তাদের কথা বিশ্বাস করলে ঈমানও থাকবেনা।
------------  মুহাম্মাদ অাইনান ইকবাল

Friday, November 17, 2017

দুই হাজার একশো সতের সালের একদিন


২১১৭ সাল...
(বিজ্ঞান এখন অনেক উন্নত।মানুষের জীবন অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।অামি গল্পে ২১১৭ সালের একটি দিনের কথা বর্ণনা করছি।)
জাবের অাজ ঘুম থেকে দেরি করে উঠল।কারণ অাজ ছুটির দিন।অফিস বন্ধ।
তাই সে ব্রেইনফোন দিয়ে তার বন্ধু রাকিবের সাথে যোগাযোগ করল।রাকিবকে সে অাজ তার বাসায় অাসতে বলল।
জানি অাপনারা ভাবছেন,ব্রেইনফোন অাবার কি।ব্রেইনফোন হলো নব্য অাবিষ্কৃত এমন একটি যোগাযোগ করার যন্ত্র যার মাধ্যমে অাপনি কি ভাবছেন তা অাপনার বন্ধুকে দূর থেকে বুঝাতে পারেন।এক্ষেত্রে দু'পক্ষে দু'টি যন্ত্র (যার মধ্যে একটি হলো প্রেরক ও অারেকটি গ্রাহক যন্ত্র) প্রয়োজন।অার এই যন্ত্রের মাধ্যমে অাপনি যার সাথে যোগাযোগ করতে চান তার নির্দিষ্ট চার ডিজিটের নম্বর অাপনার যন্ত্রটিতে টাইপ করতে হবে।
যাই হোক,রাকিব এল।রাকিবকে দেখে জাবেরও অনেক খুশি।বলে রাখা ভালো যে রাকিব অার জাবের ছুটির দিনে কোনো না কোনো বিষয়ে অালোচনা করে।তাই অাজও তার ব্যতিক্রম হলোনা।খাওয়া-দাওয়া শেষ করে তারা চিন্তা করেছে অাজ একটু ভিন্নধর্মী বিষয় নিয়ে অালোচনা করবে।তাদের অাজকের অালোচনার টপিক : 'একুশ শতকের বিজ্ঞান'।
রাকিব জাবেরকে  বলল,"ইতিহাস থেকে যতটুকু জানা যায়,একুশ শতকের মানুষেরা বিজ্ঞান বিষয়ে অনেক অাগ্রহী ছিলেন এবং অনেক কিছু অাবিষ্কারও করেছিলেন।কিন্তু হাস্যকর ব্যাপার হলো,তাদের অনেকেই ভাবতেন যে তারা বিজ্ঞান বিষয়ে প্রায় জ্ঞানই অর্জন করে ফেলেছেন।তারা নিজেদেরকে অাধুনিক বিশ্বের মানুষ বলেও দাবী করতেন।"
জাবের হেসে বলল,"তারা যদি এত অাধুনিক হতেন তাহলে অাজকের মানুষেরা কি!"
জাবের অারও বলল,"অাসলে একুশ শতকে অনেক কিছু অাবিষ্কার হয়ে ছিল ঠিক।তবে তাই বলে একুশ শতককে অত্যাধুনিক বলা যায়না।"
রাকিব বলল,"একদম ঠিক কথা।শুনেছি তারা নাকি যোগাযোগের জন্য একটি যন্ত্র ব্যবহার করতেন যার নাম ছিল মোবাইল।এটার গঠন প্রকৃতি নাকি অামাদের অাজকের ব্রেইনফোনের মতো ছিল।কিন্তু কার্যকারিতা ব্রেইনফোন থেকে অালাদা।এই সম্পর্কে তোর কি মতামত?"
জাবের : হ্যা দোস্ত।কিন্তু যন্ত্রটার কথা শুনে অামার কেমন জানি অাজব অাজব লাগে।অাচ্ছা তুই কি তাদের সম্পর্কে অারেকটি মজার কথা জানস?
রাকিব : না।কি?
জাবের : তাদের মধ্যে নাকি কোনো কোনো মানুষ  ছিল যারা অাল্লাহকে অস্বীকার করত!
রাকিব : কি বলছ!তারা এতই পাগল ছিল।
জাবের : সবাই না।তবে কিছু কিছু মানুষ ছিল যারা কিনা ভাবত অাল্লাহ বলতে কিছু নেই।অারও হাস্যকর ব্যাপার হলো তারা নাকি ভাবত তারা নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছে।ঐ গুটিকয়েক পাগলগুলা নাকি ভাবত তারা বানর থেকে মানুষে পরিণত হয়েছে।তারা নাকি 'বিবর্তনবাদ' নামক একটি কল্পকাহিনীতেও বিশ্বাস করত।অার এই কল্পকাহিনীর মূল কথা ছিল যে অনেক প্রাণী বিবর্তনের মাধ্যমে অন্য প্রাণীতে পরিণত হয়েছে।যেমন : বানর থেকে মানুষ।
রাকিব : হা হা।কি বলছ!এমন পাগলও পৃথিবীতে ছিল!
জাবের : হ্যা বন্ধু।অাবার এরাই নাকি নিজেদেরকে বিজ্ঞানমনস্ক বলে দাবী করতো।তারা নাকি অাবার অাল্লাহর বিধানকেও অস্বীকার করতো।
রাকিব : অাহারে!তখনের এই মানুষগুলা কতই না অজ্ঞ অার অশিক্ষিত ছিল।যারা একদিকে নিজেদেরকে বিজ্ঞানমনস্ক দাবী করতো অন্যদিকে স্রষ্টার অস্তিত্বকে পর্যন্ত অস্বীকার করত।কিন্তু বাইশ শতকের এই অাধুনিক অথচ গতিশীল বিশ্বেতো স্রষ্টাকে অস্বীকার করা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক।অাজকের বিজ্ঞান বলে অাল্লাহ ছাড়া দুনিয়া সৃষ্টিই অসম্ভব।অার কি যেন কাল্পনিক গল্পকাহিনী বললি!
জাবের : বিবর্তনবাদ!
রাকিব : হ্যা।এই বিবর্তনবাদওতো অযৌক্তিক।অাজকের বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে পৃথিবীর সব মানুষ সর্বপ্রথম এক পুরুষ ও এক নারী থেকেই এসেছে।
জাবের : হুম।অাসলে ঐ সময়ের কিছু মানুষ অাল্লাহ তা'অালা,তাঁর বিধান কুরঅান ও তাঁর পয়গম্বরের প্রতি বিশ্বাস না করে অযৌক্তিকভাবে কতগুলো অর্ধশিক্ষিত বিজ্ঞানীদের প্রতি অন্ধবিশ্বাস করেছিল।অার তারা বোধ হয় জানতোই না যে বিজ্ঞান গতিশীল ও পরিবর্তনশীল।অন্যদিকে ইসলাম পরিপূর্ণ।
রাকিব : একদম ঠিক।এখন যদি কেউ এমন ভাবনা নিয়ে চলে তবে তাকে কি বলা যায়?
জাবের : বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের এই যুগে কেউ অাল্লাহ,তাঁর বিধান কুরঅান ও তাঁর রসূলকে অস্বীকার করলে সে হয়ত পাগল অথবা বেকুব।অবশ্য এখন বোধ হয় এমন কোনো গাধা নেই।
রাকিব : হ্যা একদম ঠিক।অাসলে এরা ছিল বিজ্ঞানান্ধ।অাচ্ছা দোস্ত এসব অবৈজ্ঞানিক অর্ধশিক্ষিত বেকুবদের কথা অার অালোচনা করে লাভ নাই।অার একুশ শতকের সবাই কিন্তু এমন ছিলেননা।অনেকেই ছিলেন পূর্ণ ঈমানদার।
জাবের : হ্যা দোস্ত।যাই হোক,চল একটু বাইরে থেকে ঘুরে অাসি।
রাকিব : ওকে।চল।
---- Muhammad Ainan Iqbal

Monday, October 30, 2017

ওরশ করা যাবে কি?


লেখক : Muhammad Ainan Iqbal
----------------------------------------------------
 পর্ব :০১
********************
চলুন প্রথমে জেনে নিই যে ওরশ কাকে বলে।মূলত বছরে একটি নির্দিষ্ট দিনকে উদ্দেশ্য করে কোনো কথিত বা প্রকৃত বুযুর্গ অথবা অাউলিয়া,যিনি কিনা মৃত,তার মৃত্যু দিবস অথবা জন্ম দিবসকে কেন্দ্র করে তার নামে বা অাল্লাহর নামে অথবা অাল্লাহ তা'অালার সাথে সাথে এই বুযুর্গ বা অাউলিয়ার নাম নিয়ে কোনো পশু যবেহ করে,বিশেষ কোনো অানন্দ অনুষ্ঠানের অায়োজন করা,খাবারের অায়োজন করাকে সাধারণত ওরশ বলে।
ওরশের উদ্দেশ্য থাকে যেই বুযুর্গ বা অাউলিয়ার জন্য ওরশ করা হলো তার মাধ্যমে অাল্লাহর কাজ থেকে কিছু সওয়াব অর্জন করা।
ওরশ করা যাবেনা।কারণ প্রথমতঃ ওরশ বিদা'অাতের অন্তর্ভুক্ত।
ওরশ বিদা'অাতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণ হলো কুরঅান ও হাদীসে ওরশ করার কথা নেই।
অার যা কুরঅানে বা হাদীসে নেই তা যদি কেউ ইবাদত মনে করে সওয়াবের উদ্দেশ্যে করে তাহলে সুস্পষ্ট বিদা'অাত হবে।
বিদা'অাত বলতে ধর্মে নতুন কিছু সংযোজন করাকে বুঝায়।
বিদা'অাতের কুফল সম্পর্কে পবিত্র কুরঅানেই সংক্ষিপ্তভভাবে বলে দেয়া হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন -
"অতঃপর সত্যের পর ভ্রষ্টতা ছাড়া কী থাকে?" (সূরা ইউনুস আয়াত : ৩২)
অর্থ্যাৎ,ইসলাম পূর্ণতা লাভ করার পর ইসলামের নামে দ্বীনের মধ্যে যা কিছু সংযোজিত, আবিস্কৃত ও প্রচলিত হবে সব কিছুই ভ্রান্ত বলে প্রত্যাখ্যাত হবে। আর তা বিদা'আত বলে গণ্য হবে।
আল্লাহ তা'আলা অন্যত্র বলেন -
"আমি এ কিতাবে কোন কিছু বাদ রাখিনি।" (সূরা আন'আম, আয়াত : ৩৮)
অর্থাৎ, আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনুল কারীমে সব কিছু যখন বলে দিয়েছেন তখন ধর্মে নতুন কোন বিষয় সংযোজন বা বিয়োজন করার প্রয়োজন নেই। যে কোন ধরনের সংযোজন ও বিয়োজনই বিদা'আত বলে গণ্য হবে।
তাই যেহেতু ওরশের কথা কুরঅান ও হাদীসে নেই,তাই ওরশ করা বিদাঅাত।
আয়েশা রাঃ বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, " যে ব্যক্তি এমন আমল করল যাতে আমার কোন নির্দেশনা নেই,  তা পরিত্যাজ্য।" ( মুসলিম হাদীস,১৭১৮ )
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি এমন আমল করবে যার ব্যাপারে আমার শরীয়তের নির্দেশনা নেই, উহা প্রত্যাখ্যাত।” (মুসলিম হাদীস,৩২৪৩)

অার এই কারণেই ওরশ করা যাবেনা যেহেতু এই ব্যাপারে রসূলুল্লাহর(স:) কোনো নির্দেশনা নেই।

তিনি আরো বলেন- " নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম কথা হচ্ছে আল্লাহ্‌র কিতাব, সর্বোত্তম পদ্ধতি হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর পদ্ধতি। আর নিকৃষ্ট কাজ হচ্ছে শরীয়াতে নতুন কিছু সৃষ্টি করা, এবং প্রত্যেক বিদা'আত হচ্ছে ভ্রষ্টতা। (মুসলিমঃ ৭৬৮)
যেহেতু ওরশ বিদা'অাত অর্থ্যাৎ এর কথা কুরঅান ও হাদীসে নেই সুতরাং উপরোক্ত হাদীস অনুযায়ী এটি ভ্রষ্টতা।
---------------------------------
পর্ব :০২
*********************
পূর্বের অালোচনা থেকে এই কথা নিশ্চিত ও সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে ওরশ করা বিদা'অাত।অতএব,ওরশ করা যাবেনা।অাজকে ওরশ করতে না পারার অারেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বর্ণনা করছি।
ওরশ করা যাবেনা কারণ ওরশ শির্কেরও অন্তর্ভুক্ত।ওরশ কেন শির্কের অন্তর্ভুক্ত তা বুঝতে হলে অামাদের অবশ্যই শির্ক সম্পর্কে জানতে হবে।প্রথম পর্বে যেহেতু অামি ওরশের সংজ্ঞা দিয়েছি,তাই এখন দ্বিতীয়বার ওরশের সংজ্ঞা দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিনা।
অামি এখন শির্কের সংক্ষিপ্ত এবং সহজ অথচ প্রকৃত সংজ্ঞাটি দেয়ার চেষ্টা করছি।
অারবি 'শির্ক' শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো  সংযুক্তি, সম্মিলন, মিশ্রণ, শামিল বা অংশীদারিত্ব।
ইশরাক বা শরীক করার অর্থ হলো কোনকিছুকে মিশ্রিত করা, যুক্ত করা, মিলানো, একত্রিত করা, শামিল বা অংশীদার করা। শির্ক শব্দ থেকে উদগত ও রূপান্তরিত প্রতিটি শব্দের মধ্যে তার এ মৌলিক অর্থগুলো পাওয়া যায়।
অহএব,অাল্লাহর সাথে অন্যকিছুকে বা অন্য কাউকে যেকোনো দিক থেকে শরীক করাই শির্ক।শির্ক হতে পারে অাল্লাহ তা'অালার নাম,গুণাবলী,মর্যাদা,ক্ষমতা ইত্যাদির সাথে অন্য কারো নাম,গুণাবলী,মর্যাদা,ক্ষমতা ইত্যাদির তুলনা করলে,অংশীদার করলে,প্রাধান্য দিলে।
এখন চলুন যেনে অাসি ওরশ কেন শির্ক হবে।ওরশে যদি অাল্লাহ ব্যতীত অার কারো নামে পশু যবেহ করা হয়,তবে তা সুস্পষ্ট শির্ক।কারণ কুরঅানেই বলা অাছে,একমাত্র অাল্লাহর নামে পশু যবেহ করার কথা।অতএব,অাল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নাম নেয়া হলে তা অাল্লাহর নামের ওপর তাকে প্রাধান্য দেয়া হয়,যা সুস্পষ্ট শির্ক।যদি ওরশে পশু যবেহ করার সময় অাল্লাহর নাম নেয়া হলো এবং সাথে অন্য কারো নামও নেয়া হলো তবে তা-ও শির্ক হবে।কেননা এক্ষেত্রে অাল্লাহর নামের সাথে অন্য কারো নামকে অংশীদ্বার করা হলো,শরীক করা হলো।
যদি ওরশে যবেহ করা প্রাণীতে শুধু অাল্লাহর নামও নেয়া হয় তবু তা শির্কের অন্তর্ভুক্ত হবে।এর একটি কারণও রয়েছে।এই কারণটি অতি সুক্ষ্ম তাই অনেকে উপলব্ধি করতে পারেনা।অাবার অনেকে বুঝতে পারলেও অন্ধভক্তির কারণে ভুল পথে থেকে যায়।চলুন এবার যেনে অাসি কি সেই কারণ।ওরশ করার উদ্দেশ্যই থাকে অমুক বুযুর্গ বা অাউলিয়াকে মর্যাদা দেয়ার মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি অর্জন করে সওয়াব লাভ করা।কিন্ত এরূপ মর্যাদা যেখানে কিনা উদ্দেশ্য থাকে অমুক বুযুর্গ বা অাউলিয়ার  সন্তুষ্টি অর্জন করে সওয়াব লাভ করা,তা সম্পূর্ণ শির্ক।কারণ কেবলমাত্র অাল্লাহকেই সন্তুষ্ট করে সওয়াব লাভ করা যাবে।ওরশে সওয়াব লাভের জন্য অাল্লাহ তা'অালার সাথে বান্দার সন্তুষ্টি ও মর্যাদাকেও শরীক করা হচ্ছে,অংশীদ্বার করা হচ্ছে,যা সুষ্পষ্ট শির্ক।
অাশা করি,ওরশ কেন শির্কের অন্তর্ভুক্ত তা বুঝা গেল।
চলুন এবার শির্কের পরিণতি সম্পর্কে কিছুটা জেনে অাসি।
শির্ক সম্পর্কে অাল্লাহ বলেন,إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ  (لقمان : )
অর্থ :"নিশ্চয় শির্ক চরম জুলুম।" (লুকমান : ১৩)

মহান আল্লাহ তা'অালা অারো বলেন,"তোমরা সূর্যকে সেজদা করোনা, চন্দ্রকে ও নয়, সেজদা কর সেই আল্লাহকে যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা প্রকৃত পক্ষে তারই ইবাদাত কর।"(সূরা ফুসসিলাতঃ আয়াত-৩৭)

আল্লাহ আরো বলেন :

فَمَنْ كَانَ يَرْجُوا لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا (الكهف :১১০)

অর্থ :"সুতরাং,যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাত কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে।" (আল-কাহাফ : ১১০)
শুধু এসব অায়াতই নয় শির্ক সম্পর্কে অারো অনেক অায়াত ও হাদীস রয়েছে।
এবার বলুন,ওরশ করা স্পষ্ট শির্ক এবং শির্ক করার ভয়াবহ পরিণতি জানা সত্ত্বেও একজন সুস্থ বিবেকবান মুসলিম কিভাবে ওরশ করতে পারে?
---------------------------------
পর্ব :০৩
*********************
পূর্বের দু'টি পর্ব থেকে এ কথা স্পষ্ট যে ওরশ করা শুধু বিদা'অাতই নয় বরং শির্ক।অতএব,ওরশ করা মানে বিদা'অাত করা এবং শির্ক করা।
ওরশ করার অারো অপকারিতা অামি বর্ণনা করা প্রয়োজন মনে করছি।
অাল্লাহ তা'অালা পবিত্র কুরঅানে বলেন :-
حُرِّمَتۡ عَلَيۡكُمُ الۡمَيۡتَةُ وَالدَّمُ وَلَحۡمُ الۡخِنۡزِيۡرِ وَمَاۤ اُهِلَّ لِغَيۡرِ اللّٰهِ بِهٖ وَالۡمُنۡخَنِقَةُ وَالۡمَوۡقُوۡذَةُ وَالۡمُتَرَدِّيَةُ وَالنَّطِيۡحَةُ وَمَاۤ اَكَلَ السَّبُعُ اِلَّا مَا ذَكَّيۡتُمۡ وَمَا ذُبِحَ عَلَى النُّصُبِ وَاَنۡ تَسۡتَقۡسِمُوۡا بِالۡاَزۡلَامِ‌ؕ ذٰلِكُمۡ فِسۡقٌ‌ؕ الۡيَوۡمَ يَٮِٕسَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا مِنۡ دِيۡنِكُمۡ فَلَا تَخۡشَوۡهُمۡ وَاخۡشَوۡنِ‌ؕ الۡيَوۡمَ اَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِيۡنَكُمۡ وَاَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِىۡ وَرَضِيۡتُ لَكُمُ الۡاِسۡلَامَ دِيۡنًا‌ؕ فَمَنِ اضۡطُرَّ فِىۡ مَخۡمَصَةٍ غَيۡرَ مُتَجَانِفٍ لِّاٍِثۡمٍ‌ۙ فَاِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ﴾

৩.) তোমাদের জন্য হারাম করে দেয়া হয়েছে মৃতজীব, রক্ত, শূকরের গোস্ত, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর নামে যবেহকৃত জীব এবং কণ্ঠরুদ্ধ হয়ে, আহত হয়ে, ওপর থেকে পড়ে গিয়ে বা ধাক্কা খেয়ে মরা অথবা কোন হিংস্র প্রাণী চিরে ফেলেছে এমন জীব, তোমরা জীবিত পেয়ে যাকে যবেহ করে দিয়েছো সেটি ছাড়া। আর যা কোন বেদীমূলে যবেহ করা হয়েছে (তাও তোমাদের জন্য হারাম করে দেয়া হয়েছে। ) এছাড়াও শর নিক্ষেপের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য নির্ণয় করাও তোমাদের জন্য জায়েয নয়।এগুলো ফাসেকীর কাজ। আজ তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে কাফেররা পুরোপুরি নিরাশ হয়ে পড়েছে। কাজেই তোমরা তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় করো। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি, আমার নিয়ামত তোমাদের প্রতি সম্পূর্ণ করেছি এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছি (কাজেই তোমাদের ওপর হালাল ও হারামের যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা মেনে চলো। ) তবে যদি কোন ব্যক্তি ক্ষুধার জ্বালায় বাধ্য হয়ে ঐগুলোর মধ্য থেকে কোন একটি জিনিস খেয়ে নেয় গুনাহের প্রতি কোন আকর্ষণ ছাড়াই, তাহলে নিঃসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী।
(সূরা মায়িদা, অায়াত :০৩)
উক্ত অায়াতে অাল্লাহ তা'অালা মৃতজীব,রক্ত,শূকরের গোস্তকে হারাম করার পাশাপাশি অাল্লাহ ব্যতীত অন্য কারোর নামে যবেহকৃত জীব খেতে নিষেধ করেছেন।ওরশ করার জন্য যে জীব যবেহ করা হয় তাতে যদি অাল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নাম নেয়া হয় তাহলে তা খাওয়া সম্পূর্ণ হারাম হবে।অার যদি ওরশে যবেহ করা জীবে অাল্লাহর নাম নেয়া হয় তবে মনে মনে অমুক বুযুর্গ বা অাউলিয়ার নাম নেয়া হয় বা তাঁদের নামে নিয়্যাত করা হয় তা-ও হারাম হবে।কেননা প্রত্যেকটা কাজই নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল।
রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "সকল আমল নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল। আর প্রত্যেক ব্যক্তি তাই পাবে যা সে নিয়্যাত করবে। সুতরাং আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের দিকে যে হিজরাত করবে তার হিজরাত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে হবে। আর যে ব্যক্তি হিজরাত করবে দুনিয়ার উদ্দেশ্যে, কিংবা কোন মহিলাকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে, তাহলে তার হিজরাত হবে সেই দিকে যেদিকে সে হিজরাত করল। (বুখারী, মুসলিম)
অতএব,যবেহ করার সময় অাল্লাহর নাম নিলেও যদি নিয়্যাতে অাল্লাহর সাথে অন্য কারো নাম থাকে অথবা শুধু অন্য কারো নামে নিয়্যাত করা হয়,তা খাওয়া সম্পূর্ণ হারাম।
অার অাল্লাহ তা'অালা যা হারাম করেছেন,তাকে হালাল মনে করা কুফর।

মহান আল্লাহ্ তা'অালা বলেন,
ومن يعص الله ورسوله ويتعد حدوده يدخله نارا خالدا فيها وله عذاب مهين.
অর্থঃ- “যে কোন ব্যক্তি আল্লাহ্ পাক এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাফরমানি এবং তাঁর সীমা অতিক্রম করে, তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সে সেখানে চিরকাল থাকবে এবং তার জন্য সেখানে রয়েছে লাঞ্ছিত শাস্তি।” (সূরা নিসা :১৪)

সূরা মায়িদার ৩ নম্বর অায়াতের ন্যায় সূরা বাকারার ১৭৩ নম্বর অায়াতেও অাল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে যবেহ করা পশুকে হারাম করা হয়েছে।
اِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيۡکُمُ الۡمَيۡتَةَ وَالدَّمَ وَلَحۡمَ الۡخِنۡزِيۡرِ وَمَآ اُهِلَّ بِهٖ لِغَيۡرِ اللّٰهِ‌ۚ فَمَنِ اضۡطُرَّ غَيۡرَ بَاغٍ وَّلَا عَادٍ فَلَآ اِثۡمَ عَلَيۡهِ‌ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ‏﴾

অর্থ :"আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর যদি কোন নিষেধাজ্ঞা থেকে থাকে তাহলে তা হচ্ছে এই যে, মৃতদেহ খেয়ো না, রক্ত ও শূকরের গোশত থেকে দূরে থাকো। আর এমন কোন জিনিস খেয়ো না যার ওপর আল্লাহ‌ ছাড়া আর কারোর নাম নেয়া হয়েছে।১৭১ তবে যে ব্যক্তি অক্ষমতার মধ্যে অবস্থান করে এবং এ অবস্থায় আইন ভঙ্গ করার কোন প্রেরণা ছাড়াই বা প্রয়োজনের সীমা না পেরিয়ে এর মধ্য থেকে কোনটা খায়, সেজন্য তার কোন গোনাহ হবে না। আল্লাহ‌ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।"(আল-বাক্বারাহ ১৭৩)

এই অায়াতটিতেও অাল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নাম নেয়া জিনিস খেতে নিষেধ করা হয়েছে।
অতএব,উপরোক্ত অালোচনা থেকে এই সিদ্ধান্তে যাওয়া যায় যে ওরশে যবেহ করা পশুতে যদি অাল্লাহ তা'অালা ছাড়া অন্য কারো নাম নেয়া হয় অথবা অাল্লাহর নামের পাশাপাশি অন্য কারো নামও নেয়া হয় বা মুখে অাল্লাহর নাম নিলেও মনে মনে অন্য কারো নাম নেয়া হয়,অন্য কারো নামে নিয়্যাত করা হয় তাহলে ওরশকে বরকত মনে করা,ওরশের মাংস খাওয়া হালাল মনে করা কুফর।
কারণ অাল্লাহ তা'অালা যা হারাম করেছেন,তাকে হালাল মনে করা কুফর।
অাবার যারা অাউলিয়া-বুযুর্গদের ওরশ এজন্য করে যাতে ঐ অাউলিয়া-বুযুর্গদের মাধ্যমে তারা অাল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারে,তারা মিথ্যাবাদী কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
কারণ আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন :- أَلَا لِلَّه
ِ الدِّينُ الْخَالِصُ ۚ وَالَّذِينَ اتَّخَذُوا مِنْ دُونِهِ أَوْلِيَاءَ مَا نَعْبُدُهُمْ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَا إِلَى اللَّهِ زُلْفَىٰ إِنَّ اللَّهَ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فِي مَا هُمْ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي مَنْ هُوَ كَاذِبٌ كَفَّارٌ
"জেনে রাখুন, নিষ্ঠাপূর্ণ এবাদত আল্লাহরই নিমিত্ত। যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যে আমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে তাদের পারস্পরিক বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা করে দেবেন। আল্লাহ মিথ্যাবাদী কাফেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।"(৩৯,৩)
এবার অাপনারাই ভেবে দেখুন,ওরশ করা বা ওরশের মাংস খাওয়া যাবে কিনা।

--------------------------------
পর্ব :০৪/শেষ পর্ব
*********************
পূর্বের পর্ব তিনটির অালোচনা থেকে এই কথা স্পষ্ট যে ওরশ করা মানে একই সাথে (ভিন্ন ভিন্ন কারণে) বিদা'অাত করা,শির্ক করা,কখনো কখনো কুফরও করা।এতসব অপকারিতা থাকার পরও মিথ্যা সওয়াবের দোহাই দিয়ে ধর্মব্যবসার উদ্দেশ্যে কেউ এতবড় গুনাহগার কিভাবে হতে পারে অামি জানিনা।তবে অামার এই লেখাটা ধর্মব্যবসায়ী কিংবা অন্ধবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে নয়।বরং তাদের উদ্দেশ্যে যারা ইসলামের প্রকৃত সত্যের পথে চলতে চাই।
যারা এতদিন ভুল করে,না জেনে ওরশ করেছেন বা ওরশে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই,
অাপনারা অার কতদিন কথিত পীর অার বাপ-দাদাদের প্রতি অন্ধভক্তি ও অন্ধবিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে নিজের প্রতি এরূপ জুলুম করবেন?অাজ না হয় কাল।সবাইকেই একদিন অবশ্যই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।মৃত্যুর পর অাপনাদের এসব পূর্বপুরুষদের প্রতি অন্ধভক্তি ও অন্ধবিশ্বাস কোনো কাজেই অাসবেনা।বরং কাজে অাসবে অাপনি কতটুকু অাল্লাহর কিতাব কুরঅান ও তাঁর রসূল(সঃ) এর হাদিস অামল করেছেন।মনে রাখবেন অন্ধবিশ্বাসের কারণেই অাবু জাহেল,অাবু লাহাবরা জাহান্নামী।অাবার অনেককেই বলতে দেখি যে চারপাশের প্রতিকূল পরিবেশ অার সমাজের কারণে তারা নাকি জেনেও এসব অন্ধত্বে ডুবে থাকে।তারা বোধ হয় জানেননা যে অাবু তালিব মহানবীর(সঃ) শুভাকাঙ্কী হওয়ার পরও তিনি জাহান্নামে যাবেন।কারণ অাবু তালিব ইসলাম গ্রহণ করেননি।অার তিনি কেন ইসলাম গ্রহণ করেননি জানেন?শুধুমাত্র চারপাশের সমাজের কারণে।তাই বলে কি তিনি জান্নাতে যাবেন?না।বরং সমাজের অার প্রতিকূল পরিবেশের দোহাই দিয়ে কেউ অাল্লাহ তা'অালার বিচার থেকে পার পাবেনা।
(সমাপ্ত)

Tuesday, October 17, 2017

অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে কেন?


লেখক : মুহাম্মাদ অাইনান ইকবাল

'তোমার কি দরকার অমুকের বিরোধীতা করার?'
'প্রত্যেকেই নিজের নীতির উপর থাকুক।তোমার কি অাসে যায়?'
'সে অন্যায় করেছে,সে শাস্তি পাবে।তুমি কেন প্রতিবাদ করছ?'
-এই প্রশ্নগুলো ও এর সমার্থক প্রশ্নগুলো শুনতে শুনতে একদম তিক্ত-বিরক্ত হয়ে গেলাম।তাই এই প্রশ্নগুলোর অাড়ালে মূল যেই প্রশ্নটা লুকে অাছে তার উত্তর দিলেই ইনশাঅাল্লাহ সব প্রশ্নের উত্তর চলে অাসবে।এখানে সব প্রশ্নেরই ভেতর মূল যে প্রশ্নটি লুকে অাছে তা হলো,"অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে কেন?"
প্রথমেই বলে নিই একজন প্রকৃত মুসলিমের কর্তব্য হলো মহান অাল্লাহ রব্বুল অালামিনের নিকট নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করা।তাঁর দেয়া সর্বশ্রেষ্ঠ  কিতাব কুরঅানুল মাজীদের অাদেশ-নিষেধ মেনে চলা ও তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ পয়গম্বর মুহাম্মাদ মোস্তফা(স:) এর দেখানো পথে চলা।
অার কুরঅানুল মাজীদেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কথা বলা হয়েছে।
অাল্লাহ তা'অালা বলেন :-

"আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা
উচিত, যারা আহ্বান জানাবে, সৎকর্মের প্রতি,
নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং নিষেধ করবে
অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম।"[সূরা
আল-ই ইমরান:আয়াত- ১০৪]
"তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত।মানবজাতির
কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে।
তোমরা সৎ কাজের আদেশ দান করবে ও অন্যায়
কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান
আনবে।"
[সূরা আল-ই ইমরান: আয়াত-১১০]
উক্ত অায়াতগুলো থেকে চিন্তাশীল ব্যক্তি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবে যে এসব অায়াতে মহান রব অাল্লাহ তা'অালা তাঁর সর্বশেষ রসূলের(স:) উম্মতদেরকে অন্যায়ের প্রতিবাদ কঠোরভাবে করতে বলেছেন।
শুধু যে কুরঅানুল মাজীদেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বলা হয়েছে তা নয় বরং রসূলুল্লাহর (স:) হাদীসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে,
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু
থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা
আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, "তোমাদের
কেউ যদি কোনো অন্যায় কাজ সম্পাদিত হতে
দেখে সে যেন তা তার হাত দ্বারা (শক্তি প্রয়োগ
করে) প্রতিহত করে, এতে সমর্থ না হলে মৌখিক
ভাবে তা প্রতিহত করবে, এতেও সমর্থ না হলে অন্তরে
(ঘৃণার মাধ্যমে) প্রত্যাখ্যান করবে। আর এটা দুর্বলতম
ঈমানের পরিচায়ক।"
(সহীহ মুসলিম শরীফ)
প্রিয় পাঠক উক্ত হাদীসে রসূলুল্লাহ(স:) নিজের শক্তি প্রয়োগ করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বলেছেন।এতে ব্যর্থ হলে মৌখিকভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বলেছন।অার তাতেও সফল না হলে অন্তত অন্তরে অন্যায়ের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতে বলেছেন।অার শুধুমাত্র অন্তর থেকে অন্যায়ের প্রতি ঘৃণাকে মহানবী(স:) দূর্বলতম ঈমানের পরিচয় বলে অভিহিত করেছেন।
অাশা করি,ইনশাঅাল্লাহ-উপরোক্ত প্রশ্নের উত্তরটি পূর্ণাঙ্গরূপে এসেছে।
যারা বলে যে অন্যায়কারীকে হাজারো বুঝানোর পরও সে বুঝবেনা,তাদের জানা প্রয়োজন যে প্রকৃত মুসলিমের দায়িত্ব অন্যায়ের প্রতিবাদ করার,অন্যায়কারীর সংশোধন নয়।বরং অাল্লাহ তা'অালা চাইলেই অন্যায়কারী কেবলমাত্র সংশোধন হবে।
প্রকৃত মুসলিমদের কাজ হলো  অাল্লাহ তা'অালার দেয়া দায়িত্ব পালন করা। কারণ প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি
ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-
"তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর
তোমাদের প্রত্যেকেই স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে
জিজ্ঞাসিত হবে।"
[বুখারী, কিতাবুল জুম'আ: হাদীস নং ৮৪৪]

Saturday, September 16, 2017

জেনে নিন মুসলিম সিংহপুরুষ ওমর মুখতার সম্পর্কে

ওমর মুখতার (আরবি: عمر المختار‎) (১৮৬২-১৬ সেপ্টেম্বর,১৯৩১) লিবিয়ার সিরেনিকায় জানযুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[১] ১৯১২ সাল থেকে শুরু করে প্রায় বিশ বছর তিনি লিবিয়ায় ইতালীয় ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ১৯৩১ সালে তিনি ইতালীয়দের হাতে গ্রেপ্তার হন এবং তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।

জন্ম ২০ অগাস্ট ১৮৬১
জানযুর, সিরেনিকা
মৃত্যু ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩১ (৭০ বছর)
সুলুক, ইতালি অধীকৃত লিবিয়া
পেশা কুরআন শিক্ষক
যে জন্য পরিচিত ইতালীয়দের বিরুদ্ধে লিবিয়ার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী
ধর্ম ইসলাম
জীবন সম্পাদনা

ওমর মুখতার পূর্ব সিরনিকার আল-বুতনান জেলায় জানযুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি পিতৃমাতৃহীন হন। স্থানীয় মসজিদে তিনি প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ করেন। সেনুসি আন্দোলনের মূলকেন্দ্র জাগবুবের সেনুসি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ৮ বছর শিক্ষালাভ করেন। ১৮৯৯ সালে চাদে ফরাসীদের প্রতিহত করার জন্য রাবিহ আযযুবায়েরের সাহায্যার্থে অন্য সেনুসিদের সাথে তাকে চাদে পাঠানো হয়।

ইতালীয় আক্রমণ সম্পাদনা

১৯১১ সালে ইতালী-তুর্কী যুদ্ধের সময় অ্যাডমিরাল লুইগি ফারাভেলির নেতৃত্বে ইতালীয় নৌবাহিনীর একটি দল লিবিয়ার উপকূলে পৌছায় যা তৎকালে উসমানীয় তুর্কীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তুর্কী প্রশাসন ও সেনাদেরকে তাদের অধীনস্থ অঞ্চল ইতালীয়দের কাছে ছেড়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু তুর্কী ও তাদের লিবিয় মিত্ররা আত্মসমর্পণের পরিবর্তে লিবিয়ার অভ্যন্তরে চলে যায়। ইতালীয়রা তিন দিন পর্যন্ত শহরে গোলাবর্ষণ করে। এরপর অধিকৃত অঞ্চলকে ইতালীর অধীনস্থ বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনা ইতালীয় ঔপনিবেশিক সেনাবাহিনী এবং ওমর মুখতারের বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা করে।[২]

গেরিলা যুদ্ধ সম্পাদনা

পেশাগত দিক থেকে কুরআন শিক্ষক হলেও মুখতার মরুভূমিতে যুদ্ধকৌশল বিষয়ে দক্ষ ছিলেন। স্থানীয় ভূপ্রকৃতি সম্পর্কে তার সম্যক ধারণা ছিল। তার এই জ্ঞানকে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে ইতালীয়দের বিরুদ্ধে কাজে লাগান। এই ইতালীয়রা মরু অঞ্চলে যুদ্ধের সাথে পরিচিত ছিল না। মুখতার তার ছোট সৈন্যদল নিয়ে সফল গেরিলা আক্রমণে সক্ষম হন। আক্রমণের পর তার বাহিনী মরুভূমিতে আত্মগোপন করত। তার বাহিনী দক্ষতার সাথে বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, সৈন্যবহরের উপর আক্রমণ চালায় এবং যোগাযোগ ও সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তার গেরিলা পদ্ধতির লড়াইয়ে ইতালীয় সৈনিকরা পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে।[৩]

ইতালীয় গভর্নর আর্নেস্ট বমবেলি ১৯২৪ সালে জেবেল আখদারের পার্বত্য অঞ্চলে পাল্টা গেরিলা বাহিনী গঠন করেন যা বিদ্রোহীদের উপর বেশ কয়েকটি আক্রমণ পরিচালনা করে। মুখতার দ্রুত তার কৌশল পাল্টান এবং মিশর থেকে সাহায্য লাভে সমর্থ হন। ১৯২৭ সালের মার্চে ইতালীয়রা জাঘবুব দখল করে। ১৯২৭ থেকে ১৯২৮ পর্যন্ত মুখতার সানুসি বাহিনীকে পুনর্গঠিত করেন। তার দক্ষতার কারণে ইতালীয় গভর্নর জেনারেল আটিলিয়ো তেরুজ্জি ওমরকে “ব্যতিক্রমী স্থীরচিত্ত ও অটল ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন” বলে উল্লেখ করেন।

১৯২৯ সালে পিয়েত্রো বাদোগলি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান। ওমর মুখতারের সাথে আলোচনায় তাকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। সেই বছরের অক্টোবরে মুখতার এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন এবং ইতালীয় সেনানায়ক রডোলফো গ্রাজিয়ানির সাথে ব্যাপক যুদ্ধের জন্য লিবিয় যোদ্ধাদের পুনরায় সংগঠিত করেন।

জুনে পরিচালিত সেনা অভিযানে গ্রাজিয়ানির বাহিনী মুখতারের কাছে পরাজিত হয়। পিয়েত্রো বাদোগলি, এমিলো দা বোনো ও বেনিতো মুসোলিনির সাথে গ্রাজিয়ানি মুখতারের প্রতিরোধ ভেঙে দিতে পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সহস্রাধিক মানুষকে উপকূলবর্তী কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়, গিয়ারাবুবে উপকূল থেকে লিবিয়া ও মিশরের সীমানা বন্ধ করে দেয়া হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল যাতে যোদ্ধারা কোনো বিদেশী সাহায্য না পায় এবং স্থানীয় জনতার সমর্থন থেকে বঞ্চিত হয়। সানুসিদের প্রতিরোধে গ্রাজিয়ানির এই পরিকল্পনা সফল হয়। বিদ্রোহীরা সাহায্যবঞ্চিত হয় এবং ইতালীয় বিমান দ্বারা আক্রান্ত হয়। স্থানীয় চর ও সহায়তাকারীদের সাহায্যে ইতালীয় বাহিনী স্থলযুদ্ধেও বিদ্রোহীদের উপর আধিপত্য স্থাপন করে। ঝুকি সত্ত্বেও মুখতার লড়াই চালিয়ে যান। ১৯৩১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তাকে অতর্কিত আক্রমণ করে প্রেপ্তার করা হয়।


গ্রেপ্তারের পর ওমর মুখতার
মুখতারের চূড়ান্ত প্রতিপক্ষ, জেনারেল রডোলফো গ্রাজিয়ানির বর্ণনামতে : “মাঝারি উচ্চতা, সুঠাম, সাদা দাড়ি গোফ বিশিষ্ট ব্যক্তি। ওমর মুখতার ছিলেন প্রত্যুৎপন্নমতি সম্পন্ন, ধর্মীয় বিষয়ে জ্ঞানী, শক্তিসম্পন্ন ও ক্ষীপ্র ব্যক্তি, স্বার্থ ও আপোষহীন। তিনি খুব ধার্মিক ও দরিদ্র ছিলেন যদিও তিনি ছিলেন সেনুসিদের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে।”

মৃত্যুদন্ড সম্পাদনা
ইতালীয় ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে মুখতারের প্রায় ২০ বছরব্যাপী লড়াই ১৯৩১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তার প্রেপ্তারের মাধ্যমে সমাপ্তি লাভ করে। স্লোনটার নিকটে যুদ্ধে তিনি আহত অবস্থায় প্রেপ্তার হন। তাকে প্রেপ্তারে সাহায্য করায় স্থানীয় নেতাদেরকে পুরষ্কৃত করা হয়। তার দৃঢ়তা জেলারের উপর প্রভাব ফেলে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]মুখতারের জিজ্ঞাসাবাদকারীদের মতে তিনি কুরআনের শান্তিসূচক আয়াত তেলাওয়াত করতেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]


ওমর মুখতারের ফাঁসি
মাত্র তিন দিনের মধ্যেই মুখতারের বিচার সম্পন্ন হয়। বিচারে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং ১৪ সেপ্টেম্বর রায়ে তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়া হয়। তবে ঐতিহাসিকদের মতে এই বিচার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ছিল না। শেষ কথা জানতে চাওয়া হলে মুখতার কুরআনের আয়াত “ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন” (আমরা আল্লাহর জন্য এবং তার কাছেই ফিরে যাব) পাঠ করেন। ১৯৩১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সুলুকের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে তার অনুসারীদের সামনে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল সত্তর বছর।

চলচ্চিত্র সম্পাদনা

ওমর মুখতারের জীবনের শেষ দিনগুলো "লায়ন অব দ্য ডেজার্ট"(১৯৮১) চলচ্চিত্রে তুলে ধরা হয়েছে। ওমর মুখতার ও রডোলফো গ্রাজিয়ানির মধ্যকার লড়াইকে ভিত্তি করে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়। এতে অ্যান্থনি কুইন, অলিভার রিড ও আইরিন পাপাস অভিনয় করেন।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সংগ্রাহক: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল
(ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

Sunday, August 13, 2017

'আমাদের সকল কাজের মূলে যদি থাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি তবে আমাদের সফলতা আসবেই'

-------মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল
এই পৃথিবীতে আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন কেবল তাঁর ইবাদত করার জন্য৷কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই ইবাদতের সঠিক সংজ্ঞা জানেন না৷ইবাদত বলতে মূলত আল্লাহ তা'আলার আদেশ-নিষেধ মেনে চলাকেই বোঝায়৷আর সকল ভাল কাজ করা এবং সকল মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা আল্লাহ তা'আলার আদেশ৷অতএব মানুষ যেসব ভাল কাজ করবে তার সবই এবাদত৷অন্যদিকে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকাটাও ইবাদত৷কারণ মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতেও আল্লাহ আদেশ করেছেন৷
এখন আমরা যদি এভাবে ভালো কাজ করি ও মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকি তাহলে আল্লাহ রব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জন আমাদের পক্ষে সহজ হয়ে যাবে৷কেননা আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাঁর ইবাদত করার জন্যই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন৷আর উপরের আলোচনা থেকে এই কথা স্পষ্ট প্রতীয়মান যে সকল ভাল কাজ করা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকাই আল্লাহর ইবাদত৷
এখন আমরা যদি সর্বাবস্থায় বিভিন্ন ভাল কাজ করি এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকি তাহলে চিন্তা করুন আমাদের জীবনটা কত সুখময় হয়ে যাবে৷
এখন আমাদের ভাল কাজের সঠিক সংজ্ঞা জানা প্রয়োজন৷কেবলমাত্র সেসব কাজই ভাল যা স্রষ্টা ভাল বলেছেন৷আর সেই সমস্ত কাজ কখনো ভাল হওয়া সম্ভব নয় যা আমাদেরকে স্রষ্টা আল্লাহ তা'আলা করতে নিষেধ করেছেন৷এমন অনেক কাজ রয়েছে যা আমার ভাল লাগলেও আপনার হয়ত ভাল লাগবেনা অথবা আপনার ভাল লাগলেও আমার ভাল লাগবেনা৷তাই কোন কাজটি প্রকৃতপক্ষে ভাল তা আমাদের সাধারণ জ্ঞান দ্বারা জানা সম্ভব নয়৷তাই কেবলমাত্র সেসব কাজকেই ভাল বলা যাবে যা আল্লাহ ভাল বলেছেন৷অন্যদিকে আল্লাহ তা'আলা যেসব কাজকে খারাপ বলেছেন তা-ই খারাপ৷কেননা আল্লাহ সব জানেন৷তিনিই প্রকৃত ভাল খারাপ নির্ণয়ের ক্ষমতা রাখেন৷
আল্লাহর সন্তুষ্টির মাধ্যমে কিভাবে আমরা সফল হতে পারি তা একটি উদাহরণের মাধ্যমে বোঝানো যায়৷যেমন ধরুন আল্লাহ তা'আলা মিথ্যা কথা বলতে নিষেধ করেছেন এবং সত্য বলতে বলেছেন৷এখন আমরা যদি মিথ্যা থেকে বিরত থাকি আর সত্য বলি তবে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারব৷কারণ সত্য বলা আর মিথ্যা না বলা এই দুটো কাজই আল্লাহর ইবাদত৷আর এইভাবে আমরা যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সর্বাবস্থায় সত্য বলি ও মিথ্যা থেকে বিরত থাকি তাহলে আমরা অন্যান্য অপরাধ থেকেও বিরত হতে পারব৷আর এইভাবেই আমরা ভাল কাজ করে দুনিয়াতে মানুষের কাছে যেমন সমাদৃত হতে পারি ঠিক তেমনই আখিরাতেও সফলতা লাভ করতে পারি৷

Monday, August 7, 2017

'বাংলাদেশের কথিত নাস্তিকদের উদ্দেশ্য কি'

প্রথমেই বলেনি আমি এখানে 'কথিত নাস্তিক' বলতে কাদের বোঝাচ্ছি৷'কথিত নাস্তিক' বলতে আমি মূলত তাদেরই বোঝাচ্ছি যারা নিজেদেরকে 'নাস্তিক' বলে দাবী করলেও মূলত তারা ইসলামবিরোধী৷
বাংলাদেশে ব্লগে,ফেইসবুকে কিংবা অন্যকোনো মিডিয়ায় যারা নিজেদেরকে 'নাস্তিক' বলে দাবী করে তাদেরকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় শুধু মাত্র ইসলামেরই বিরোধীতা করতে৷
নাস্তিক হচ্ছে শুধুমাত্র তারাই যারা কোনো ধর্মকেই বিশ্বাস করেনা৷কিন্তু যারা শুধুমাত্র একটি ধর্মের বিরোধীতা করে তারা নাস্তিক হয় কি করে?বাংলাদেশে যারা নিজেদের 'নাস্তিক' বলে শুধু তারা ইসলামের বিরোধী পক্ষ হয়ে কাজ করে৷
নাস্তিক বলতেতো কোনো ধর্মের বিরোধী বোঝায়না৷বরং ধর্মের প্রতি যাদের আস্থা নেই তারাই নাস্তিক৷
তাই বাংলাদেশে মূলত নাস্তিক নেই৷বরং রয়েছে ইসলামবিরোধী৷আর এই কথিত নাস্তিক তথা ইসলামবিরোধীদের মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশ থেকে মুসলিমদের উৎখাত করা৷
তাই এইসব কথিত নাস্তিকদের শাস্তির আওতায় আনা খুবই প্রয়োজন৷এরা ইসলাম,রাষ্ট্র ও সরকারের শত্রু এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী৷

-------------------------------মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল

বাংলাদেশের মিডিয়া কাদের পক্ষপাতিত্ব করে


---------- Muhammad Ainan Iqbal ----------------
বর্তমান যুগে মিডিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়৷কিন্তু মিডিয়াগুলো যখন বিশেষ কোনো গোষ্ঠী,দল বা মতের পক্ষে কাজ করে অথবা বিরুদ্ধে কাজ করে তখন সঠিক খবর পাওয়া কঠিন হয়ে ওঠে৷
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বর্তমানে বেশিরভাগ মিডিয়ায় বিশেষ কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের পক্ষপাতিত্ব করে৷আবার অনেক গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের বিরোধীতা করে৷অর্থ্যাৎ নিরপেক্ষতা বিষয়টি বর্তমান মিডিয়া জগতে এককথায় নেই বললেই চলে৷
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মিডিয়া সম্পর্কে অনেক মানুষের যে ধারণা ছিল তা থেমিস মূর্তিটি অপসারণের পর অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে৷অধিকাংশ মানুষই ভাবত যে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মিডিয়া সরকারের পক্ষেই কথা বলে৷অর্থ্যাৎ যখন যেই দল ক্ষমতাই থাকে সেই দলেরই পক্ষে কথা বলে৷কিন্তু গ্রীকের থেমিস মূর্তিটি অপসারণ এবং অন্যত্র পুনঃস্থাপনের পর মিডিয়া সম্পর্কে মানুষের ধারণা পাল্টানোর কথা৷কারণ প্রধানমন্ত্রীর নিজ উদ্যোগেই সেই মূর্তিটি অপসারিত হয়৷কিন্তু অপসারণের পর বেশিরভাগ মিডিয়া এই কাজের সম্পূর্ণ বিরোধীতা করেছে৷তারা মূর্তি অপসারণকে এই সরকারের রাজনৈতিক অপকৌশল হিসেবে অপপ্রচার করেছে৷অন্যদিকে গুটিকয়েক নাস্তিকের ক্ষোভ জানানোকে তারা বেশ ফলাওভাবে প্রচার করেছে৷এমনকি মূর্তি অপসারণে ইসলামী দলগুলোর উচ্ছাস প্রকাশকে বেশিরভাগ মিডিয়য় প্রকাশ করেনি৷আবার অনেকে বিষয়টিকে নেতিবাচকভাবে প্রকাশ করেছে৷
আবার মূর্তিটি পুনঃস্থাপনের বিষয়টি ঐসব মিডিয়া খুব ফলাওভাবে প্রচার করেছে যারা কিনা মূর্তিটি সরিয়ে ফেলার সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল৷কিন্তু এসব মিডিয়া মূর্তি পুনঃস্থাপনে মুসলিমদের ক্ষোভ প্রকাশ করার বিষয়টি প্রচার করেনি৷সুপ্রীমকোর্টের সামনে মুসলিমদের আন্দোলন করার বিষয়টিও প্রকাশ করেনি৷এমনকি এইসব মিডিয়ায় গ্রীক মূর্তিটির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যও প্রকাশিত হয়নি৷
তাহলে আপনারা কি বাংলাদেশের মিডিয়াকে নিরপেক্ষ বলবেন?না৷আসলে বাংলাদেশের মিডিয়া নিরপেক্ষ নয়৷সরকারের পক্ষে কথা না বললেই যে মিডিয়াগুলো নিরপেক্ষ হয়ে যাবে এমন কোনো কথা নেই৷বিবেচনা করলে বুঝতে পারবেন এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মিডিয়া সংখ্যালঘু নাস্তিকদেরই পক্ষপাতিত্ব করছে৷যতক্ষণ সরকার নাস্তিকদের বিরুদ্ধে যাবেনা ততক্ষণ তারা সরকারের পক্ষে কথা বলে৷আর সরকার যদি নাস্তিকদের বিরুদ্ধে যাই তারা সরকারের সমালোচনা এমনকি সরকারকে নিয়ে মিথ্যা অপবাদও দেয়৷এইসব মিডিয়া শুধু যে নাস্তিকদের পক্ষপাতিত্ব করছে তা নয় বরং ইসলামের বিরোধীতাও করছে৷
এই দেশে নাস্তিকরা সংখ্যালঘু হওয়ার পরও সংখ্যাগরিষ্ঠ মিডিয়া নাস্তিকদের পক্ষে কাজ করার কারণও রয়েছে৷কারণ নাস্তিকরা যদিও সংখ্যালঘু কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ মিডিয়ায় পরিচালনা করে নাস্তিকরা৷অনেক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী রয়েছে যারা কিনা নাস্তিকদের কাজ থেকে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার উদ্দেশ্যেই নাস্তিকদের পক্ষপাতিত্ব করে৷
এখন মুসলিমদের করণীয় হচ্ছে মিডিয়া পরিচালনায় উদ্যোগী হওয়া৷আল্লাহ যেন নাস্তিক্যবাদী মিডিয়ার অপপ্রচার থেকে আমাদের সবাইকে রক্ষা করেন এই দু'আ কামনা করি৷

Tuesday, July 25, 2017

'আধুনিক সংস্কৃতি বলতে কিছু নেই,সবই আইয়ামে জাহেলিয়াতের পুনরাবৃত্তি'



প্রায় ১৪০০ বছর আগে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মহামানব,ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মনীষি,মহান আল্লাহর পবিত্র রসূল হযরত মুহাম্মাদ(সঃ) এই পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন৷তখনকার সময়ে এই পৃথিবীকে ঘিরে ছিল নানান ধরণের কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাস৷মানুষ হয়েছিল পথভ্রষ্ট৷এক খোদার উপাসনা ছেড়ে হয়েছিল বহু খোদার পূজারী৷নারী নির্যাতন,খুন,ধর্ষণ ইত্যাদি ছিল  খুবই সাধারণ ঘটনা৷ইতিহাসবিদগণ এই যুগকে 'জাহেলিয়াতের যুগ' বা 'আইয়ামে জাহেলিয়াত' বলে আখ্যায়িত করেছিলেন৷আর এমনই এক সময়ে পৃথিবীর বুকে আলোর মশাল নিয়ে হাজির হন মহান আল্লাহর পবিত্র দূত৷
মাত্র ২৩ বছরে আরবসহ পুরো পৃথিবীতে সংগঠিত হয় এক অভিনব পরিবর্তন৷সমাজে প্রচলিত সকল কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাস দূর হয় ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে৷দূর হয় মূর্তিপূজা,মানবপূজা আর সকল প্রকার ধর্মের নামে অন্ধভক্তি৷প্রতিষ্ঠিত হয় মহান আল্লাহর দ্বীন ইসলাম৷
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজ মানুষ আবার সেই অন্ধকার যুগের দিকে ধাবিত হচ্ছে৷ইসলামী সংস্কৃতির বিপরীতে আধুনিক সংস্কৃতির নাম দিয়ে অপসংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে৷মানুষের ভেতরের পশুত্ব প্রকাশিত হচ্ছে৷নানা ধরণের অপরাধ হয়ে ওঠেছে এখনকার সময়ের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা৷এককথায় বলতে গেলে আইয়ামে জাহেলিয়তের পুনরাবৃত্তি ঘটছে বর্তমান সময়ে৷আজ বেশিভাগ মানুষই শুধু নামে মুসলিম৷ইসলামের প্রকৃত অনুসারীর সংখ্যা বর্তমান পৃথিবীতে খুব কম৷কুফর,শিরক,বিদাআতসহ আইয়ামে জাহেলিয়াতের মতো নিত্যনতুন কুসংস্কার গড়ে ওঠছে চারদিকে৷
আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা করুক৷-আমীন

সকল কাজের মূলেই যেন থাকে খোদার সন্তুষ্টি অর্জন

লেখা: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল আপনারা হয়তো মুসলিম জাহানের ৪র্থ খলিফা হযরত আলী ইবনে আবু তালিবের (রাঃ) সেই ঘটনাটি শোনেছেন। একদা যুদ্ধের ময়দান...