লেখা: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল
ইসলামে ধর্ষণের শাস্তি খুবই কঠোর। পুরো লেখাটা পড়লে আপনারা বিষয়টি নিশ্চিত হবেন ইনশাআল্লাহ। তবে আলোচনার শুরুতে ইসলামে ধর্ষণের শাস্তির তালিকা দেওয়া হলো-
১. প্রকাশ্যে পাথর মেরে হত্যা করা
২. ১০০ বেত্রাঘাত
৩. ব্যক্তিভেদে ওপরের ২ ধরণের শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি ‘মুহারাবা’র শাস্তি প্রয়োগ। (‘মুহরাবা’ সম্পর্কে নিচের বিস্তারিত আলোচনায় পাবেন)
ধর্ষণের ক্ষেত্রে এক পক্ষ থেকে ব্যভিচার সংঘটিত হয়। আর অন্য পক্ষ হয় মজলুম বা নির্যাতিত। তাই মজলুমের কোনো শাস্তি নেই। শুধু জালিম বা ধর্ষকের শাস্তি হবে। ধর্ষণের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় সংঘটিত হয়। এক. ব্যভিচার। দুই. বল প্রয়োগ। তিন. সম্ভ্রম লুণ্ঠন। ব্যভিচারের জন্য পবিত্র ক্বুরআনে বর্ণিত ব্যভিচারের শাস্তি পাবে। ইসলামে ব্যভিচারের শাস্তি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন।
ব্যভিচারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
আর যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে ১০০ বেত্রাঘাত করা হবে।
হানাফি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাব মতে, ধর্ষণের জন্য ব্যভিচারের শাস্তি প্রযোজ্য হবে।
তবে ইমাম মালেকের (রহঃ) মতে, ধর্ষণের অপরাধে ব্যভিচারের শাস্তির পাশাপাশি মুহারাবার শাস্তি প্রয়োগ করা হবে। ‘মুহারাবা’ হলো অস্ত্র দেখিয়ে বা অস্ত্র ছাড়াই ভীতি প্রদর্শন করে ডাকাতি করা কিংবা লুণ্ঠন করা। এককথায় ‘মুহারাবা’ হলো পৃথিবীতে অনাচার সৃষ্টি, লুণ্ঠন, নিরাপত্তা বিঘ্নিতকরণ, ত্রাসের রাজ্য কায়েম করা ইত্যাদি। পবিত্র ক্বুরআনে মহান আল্লাহ ‘মুহারাবা’র শাস্তি এভাবে নির্ধারণ করেছেন, “যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি হচ্ছে তাদের হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে বা তাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কেটে দেওয়া হবে কিংবা দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। এটি তাদের পার্থিব লাঞ্ছনা, আর পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।” (সুরা: মায়িদা, আয়াত: ৩৩)
এই আয়াতের আলোকে মালেকি মাজহাবে ধর্ষণের শাস্তিতে ‘মুহারাবা’র শাস্তি যুক্ত করার মত দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, সমাজে ধর্ষণ মহামারির আকার ধারণ করলে, সমাজ থেকে ধর্ষণ সমূলে নির্মূল করার লক্ষ্যে এ শাস্তি প্রয়োগ করা জরুরি। (আল মুগনি: ৮/৯৮)
সবশেষে বলতে চাই, ধর্ষণের ক্ষেত্রে ইসলামি আইন মতে শাস্তি দেওয়া হলে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে ধর্ষণ দূর হবে ইনশাআল্লাহ।
No comments:
Post a Comment