Tuesday, October 17, 2017

অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে কেন?


লেখক : মুহাম্মাদ অাইনান ইকবাল

'তোমার কি দরকার অমুকের বিরোধীতা করার?'
'প্রত্যেকেই নিজের নীতির উপর থাকুক।তোমার কি অাসে যায়?'
'সে অন্যায় করেছে,সে শাস্তি পাবে।তুমি কেন প্রতিবাদ করছ?'
-এই প্রশ্নগুলো ও এর সমার্থক প্রশ্নগুলো শুনতে শুনতে একদম তিক্ত-বিরক্ত হয়ে গেলাম।তাই এই প্রশ্নগুলোর অাড়ালে মূল যেই প্রশ্নটা লুকে অাছে তার উত্তর দিলেই ইনশাঅাল্লাহ সব প্রশ্নের উত্তর চলে অাসবে।এখানে সব প্রশ্নেরই ভেতর মূল যে প্রশ্নটি লুকে অাছে তা হলো,"অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে কেন?"
প্রথমেই বলে নিই একজন প্রকৃত মুসলিমের কর্তব্য হলো মহান অাল্লাহ রব্বুল অালামিনের নিকট নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করা।তাঁর দেয়া সর্বশ্রেষ্ঠ  কিতাব কুরঅানুল মাজীদের অাদেশ-নিষেধ মেনে চলা ও তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ পয়গম্বর মুহাম্মাদ মোস্তফা(স:) এর দেখানো পথে চলা।
অার কুরঅানুল মাজীদেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কথা বলা হয়েছে।
অাল্লাহ তা'অালা বলেন :-

"আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা
উচিত, যারা আহ্বান জানাবে, সৎকর্মের প্রতি,
নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং নিষেধ করবে
অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম।"[সূরা
আল-ই ইমরান:আয়াত- ১০৪]
"তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত।মানবজাতির
কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে।
তোমরা সৎ কাজের আদেশ দান করবে ও অন্যায়
কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান
আনবে।"
[সূরা আল-ই ইমরান: আয়াত-১১০]
উক্ত অায়াতগুলো থেকে চিন্তাশীল ব্যক্তি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবে যে এসব অায়াতে মহান রব অাল্লাহ তা'অালা তাঁর সর্বশেষ রসূলের(স:) উম্মতদেরকে অন্যায়ের প্রতিবাদ কঠোরভাবে করতে বলেছেন।
শুধু যে কুরঅানুল মাজীদেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বলা হয়েছে তা নয় বরং রসূলুল্লাহর (স:) হাদীসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে,
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু
থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা
আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, "তোমাদের
কেউ যদি কোনো অন্যায় কাজ সম্পাদিত হতে
দেখে সে যেন তা তার হাত দ্বারা (শক্তি প্রয়োগ
করে) প্রতিহত করে, এতে সমর্থ না হলে মৌখিক
ভাবে তা প্রতিহত করবে, এতেও সমর্থ না হলে অন্তরে
(ঘৃণার মাধ্যমে) প্রত্যাখ্যান করবে। আর এটা দুর্বলতম
ঈমানের পরিচায়ক।"
(সহীহ মুসলিম শরীফ)
প্রিয় পাঠক উক্ত হাদীসে রসূলুল্লাহ(স:) নিজের শক্তি প্রয়োগ করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বলেছেন।এতে ব্যর্থ হলে মৌখিকভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বলেছন।অার তাতেও সফল না হলে অন্তত অন্তরে অন্যায়ের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতে বলেছেন।অার শুধুমাত্র অন্তর থেকে অন্যায়ের প্রতি ঘৃণাকে মহানবী(স:) দূর্বলতম ঈমানের পরিচয় বলে অভিহিত করেছেন।
অাশা করি,ইনশাঅাল্লাহ-উপরোক্ত প্রশ্নের উত্তরটি পূর্ণাঙ্গরূপে এসেছে।
যারা বলে যে অন্যায়কারীকে হাজারো বুঝানোর পরও সে বুঝবেনা,তাদের জানা প্রয়োজন যে প্রকৃত মুসলিমের দায়িত্ব অন্যায়ের প্রতিবাদ করার,অন্যায়কারীর সংশোধন নয়।বরং অাল্লাহ তা'অালা চাইলেই অন্যায়কারী কেবলমাত্র সংশোধন হবে।
প্রকৃত মুসলিমদের কাজ হলো  অাল্লাহ তা'অালার দেয়া দায়িত্ব পালন করা। কারণ প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি
ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-
"তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর
তোমাদের প্রত্যেকেই স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে
জিজ্ঞাসিত হবে।"
[বুখারী, কিতাবুল জুম'আ: হাদীস নং ৮৪৪]

No comments:

Post a Comment

সকল কাজের মূলেই যেন থাকে খোদার সন্তুষ্টি অর্জন

লেখা: মুহাম্মাদ আইনান ইকবাল আপনারা হয়তো মুসলিম জাহানের ৪র্থ খলিফা হযরত আলী ইবনে আবু তালিবের (রাঃ) সেই ঘটনাটি শোনেছেন। একদা যুদ্ধের ময়দান...