লেখক : আইনান ইয়াসরবি
গফুর চৌধুরীর ঘরে আজ কান্নার রোল। এভাবে লোকটা চলে যাবেন কেউ ভাবতেই পারেননি। আরে ভদ্রলোকতো গতকালও পাড়ার 'মুক্তমনা সংঘে'র আয়োজিত 'ধর্মীয় কুসংস্কার' নামক সেমিনারে জোরালো বক্তব্য রেখেছিলেন যেখানে তিনি বলেছিলেন, "আমি ধর্ম-কর্ম করিনা। এগুলা গোঁড়ামি। ইসলাম একটি সন্ত্রাসী ধর্ম...."
সেমিনার থেকে ফিরে রাতেই হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করেন। সকাল হওয়ার আগেই মারা যান। যায় হোক, সারাজীবন ধর্মের বিরুদ্ধে কঠোর থাকা গফুর চৌধুরীর মৃত্যুর খবর শুনে ভক্তকুলকে "ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিঊন" পড়তে দেখা যাচ্ছে। অনেকে আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে। অনেকটা চাপের মুখে এলাকার ইমাম খাট্টা কম্যুনিস্ট গফুর সাহেবের জানাজাও পড়ালেন। তারপর আবার মোনাজাত করে পরকালে অবিশ্বাসী গফুর চৌধুরীর জন্য কবরের আজাবও মাফ চাওয়া হলো। তাছাড়া তার ছেলেদেরও দেখা গেলো তার ভুল-ত্রুটির জন্য মানুষের কাছে মাফ চাইতে। আচ্ছা একটা কথা বলতেই ভুলে গিয়েছিলাম। গফুর সাহেবের জানাজায় উপস্থিত লোকেরা বেশিরভাগই ওজু বানায়নি, পুকুর দূরে ছিল বলে। সবাই কান্নাকাটি করে কবরস্থানে কবর দেয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ এই সময় একজন সত্তরোর্ধ মুরুব্বিকে হাসতে দেখা যায়। এমন সময়ে কেন হাসলেন কেউ একজন জিজ্ঞেস করলে তার জবাবে তিনি কিছুটা চলিত কিছুটা আঞ্চলিক ভাষায় বললেন, "এই গফুরতো ধর্মেই বিশ্বাস কইরতোনা। আর আইজ তারই জানাজা হইলো। দাফনও হইবো। যার ধর্মই নাই তার আবার এগুলার কী দরকার! কুত্তার ধর্ম নাই, দাফনও নাই। মরা কুত্তারে ডাস্টবিনে দেখা যায়। এই ব্যাটারে এতো কষ্ট কইরা দাফন না কইরা ডাস্টবিনেওতো ফেলা যায়।" এলাকার অনেক যুবককে মুরুব্বির কথায় মৃদু হাসতে দেখা গেলো। যাক, মুরুব্বির কথাকে পাত্তা দেয় কে! দাফন করা হলো। শুনলাম, তারপর নাকি ইমাম সাহেব কবরে বসে বসে আরও কী কী পড়লেন।
[ বিশেষ দ্রষ্টব্য : এটি একটি কাল্পনিক গল্প। অনেকদিন পর গল্প লিখলাম। তাই ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। প্রয়োজনীয় মন্তব্য করে পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ। ]
No comments:
Post a Comment